ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মুস্তাফিজের অস্ত্রাগার নিয়ে বাশারের কড়া জবাব

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
মুস্তাফিজের অস্ত্রাগার নিয়ে বাশারের কড়া জবাব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর (ফাইল ফটো)

ঢাকা: ‘অস্ত্রাগারে এখনও প্রচুর অস্ত্র রয়েছে মুস্তাফিজুরের’ এমন শিরোনাম করেছে ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার। তাদের নিজস্ব সংবাদদাতার বরাত দিয়ে পত্রিকাটি টাইগার পেসারের বোলিং বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশি সাবেক ক্রিকেটারের মতামত নেন।

মুস্তাফিজ সবশেষ খেলা আইপিএল ম্যাচে বিনা উইকেটে ৩৯ রান দিয়েছেন। আর এ নিয়েই তাদের সাজানো প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাবেক দলপতি হাবিবুল বাশারের মন্তব্য নেয়া হয়।

 

তাদের সাজানো প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘পুনে সুপার জায়ান্টের পর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধেও উইকেট শূন্যই রইল মুস্তাফিজুরের ঝুলি। ধোনিদের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে উইকেট না পেলেও, মুস্তাফিজুরের ১৭ এবং ১৯তম ওভারে ম্যাচে ফেরে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। বাকি কাজটা হয়েছে আশিষ নেহরার শেষ ওভারে। কিন্তু দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে একেবারেই হতাশ করেছেন মুস্তাফিজুর। উইকেটহীন ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৩৯ রান। তার বিখ্যাত কাটারটাই যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল সেই ম্যাচে। ’

 

আনন্দবাজার তাদের প্রতিবেদনে মুস্তাফিজের কিছুটা সমালোচনা করেই তাদের লেখাটি প্রকাশ করে। তবে, টাইগার পেসারের পাশে দাঁড়ান বাংলাদেশের সাবেক দলপতি হাবিবুল বাশার। তিনি কড়া ভাষাতেই মুস্তাফিজের সমালোচনার জবাব দেন।

প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়, তবে কি ফাঁস হয়ে গেল কাটার মাস্টারের রহস্য? ওভার প্রতি প্রায় ১০ রান করে দিলেও মুস্তাফিজুরের কাটার রহস্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন না বেশির ভাগ প্রাক্তন ক্রিকেটারই। বাংলাদেশ দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার বলেন, ‘এর আগের ম্যাচে তো ধোনির মতো ক্রিকেটারও মুস্তাফিজুরকে খেলতে পারেনি। ভুবনেশ্বর কুমার, আন্দ্রে রাসেল, ক্রিস জর্ডান, মোহম্মদ সামি, জহির খানরা যেখানে ইনিংসে ৫০ রানের বেশি খরচ করে ফেলেছেন, সেখানে এক ম্যাচে মুস্তাফিজুর ৩৯ রান দেওয়া নিয়ে এত আলোচনা হওয়া উচিত না। ’

চলতি আইপিএলে দশ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন যে বোলাররা, তাদের মধ্যে ইকোনোমি সবচেয়ে ভাল মুস্তাফিজুরের। সুতরাং এক ম্যাচে মুস্তাফিজুরকে চেনা রূপে দেখা যায়নি বলেই তাকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ার কারণ দেখছেন না হাবিবুল। তার মতে, ‘টি-২০তে যেখানে বোলারদের উপর চড়াও হয় ব্যাটসম্যানরা, সেখানে ওভার প্রতি ছ’য়ের ঘরে রান দিয়েছেন মুস্তাফিজুর। এর চেয়ে ভাল বোলিং করা  কী ভাবে সম্ভব? ওকে মেরে খেলা বিপজ্জনক বলেই  তো অধিকাংশ ব্যাটসম্যান মেরে খেলতে চায় না। শেন ওয়ার্ন, মুরালিধরনও তো তাদের ক্যারিয়ারে কোনও না কোনও ইনিংসে বাজে বোলিং করেছে, তার পরও তো তারা বিশ্বের সর্বকালের সেরা বোলার। এক ম্যাচে মুস্তাফিজুর ৩৯ রান দিয়েছে বলে ওর সব কৌশল ধরে ফেলেছে, এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। তা ছাড়া প্রতিটি ম্যাচে একজন বোলার উইকেট পাবে, এটা ভাবাও ঠিক নয়। ’

প্রতিবেদনের শেষ দিকে লেখা হয়, ‘আইপিএলে মুস্তাফিজুরের কাটার রহস্য ধরতে প্রযুক্তির ব্যবহার করছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। তবে প্রযুক্তির সকল সুবিধা নিয়েও মুস্তাফিজুরের সব কৌশল জানা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন হাবিবুল। তিনি জানান, মুস্তাফিজুর কিন্তু সিম অফ করে ভেরিয়েশনে বল করছে না। কাটার দিয়েই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করছে। আইপিএলে এক একটি দলে প্রচুর সাপোর্ট স্টাফ রয়েছে। তাই ভিডিও অ্যানালাইসিস অথবা অন্য কোনও প্রযুক্তির মাধ্যমে মুস্তাফিজুরের বল বোঝার চেষ্টা করছে সবাই। তবে ওর কিছু কিছু অস্ত্র ধরতে পারলেও সমস্যার কিছুই দেখছি না। মুস্তাফিজুর যে মানের বোলার, তাতে ওর সব কাটার বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। ’

তাদের শেষ প্যারাটি ছিল এমন, ‘এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৪-০-৪০-০, এমন বোলিংয়েও মুস্তাফিজুরকে নিয়ে কম কথা ওঠেনি। তখনই বলা হচ্ছিল, মুস্তাফিজুরের জারিজুড়ি শেষ। আর তার পরেই এসেছে এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচগুলো। সেই ভারতের বিরুদ্ধেই মুস্তাফিজুর হাজির হয়েছিলেন ৪-০-৩৪-২ এর স্পেল নিয়ে। আর টি-২০ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইডেনের সেই বোলিং তো বহু দিন মনে থাকবে সবারই। চার ওভারে ২২ রানে সেদিন ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তাই মাত্র একটি ম্যাচ দেখেই তার সম্পর্কে এত সমালোচনার কারণ নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ’

এর আগেও মুস্তাফিজকে নিয়ে সরব ছিল আনন্দবাজার। তাদের বেশির ভাগ প্রতিবেদনেই দেখা গিয়েছিল কাটার মাস্টারকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে। এবারে তারাই মেতেছে সমালোচনায়। তবে, টাইগার পেসার সব সমালোচনার জবাব মাঠেই দেবে বলে টাইগারপ্রেমীদের বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ১৫ মে ২০১৬
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।