ঢাকা: প্লে-অফ নিশ্চিত করতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) জয়ের বিকল্প ছিল না। মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদকে ২২ রানে হারিয়ে গুজরাট লায়ন্স, হায়দ্রাবাদের পর প্লে-অফের টিকিট নিশ্চিত করেছে কলকাতা।
বাঁচা-মরার এ লড়াইয়ে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে কলকাতা ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করে। জবাবে, ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান তোলে হায়দ্রাবাদ।
রোববার (২২ মে) ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হয়।
কলকাতার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধনে আসেন দলপতি গৌতম গম্ভীর এবং রবিন উথাপ্পা। আর বল হাতে হায়দ্রাবাদের আক্রমণ শুরু করেন ভুবনেশ্বর কুমার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন উথাপ্পা। বারিন্দ্রান স্রানের বলে উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়েন ১৭ বলে চারটি বাউন্ডারিতে ২৫ রান করা উথাপ্পা।
দলীয় ৩৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানো কলকাতা তাদের দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলীয় ৪৮ রানের মাথায়। কলিন মুনরোকে ফেরান দীপক হুদা। উইকেটরক্ষক নামান ওঝার গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে মুনরো করেন ১০ রান। অষ্টম ওভারে দীপক হুদার দ্বিতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন ইনফর্ম গম্ভীর। ১৫ বলে ১৬ রান করে হেনরিকসের হাতে ধরা পড়েন কলকাতার দলপতি।
১১তম ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। নিজের প্রথম ওভারে তিনি খরচ করেন মাত্র ৬ রান। তার দ্বিতীয় ওভারে আরও ১৪ রান নেন কলকাতার ব্যাটসম্যানরা।
দলীয় ৫৭ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হলে কলকাতার ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন ইউসুফ পাঠান এবং মানিশ পান্ডে। ইনিংসের ১৬তম ওভারে ভুবনেশ্বর ফিরিয়ে দেন পান্ডেকে। তৃতীয় উইকেটে পান্ডে-পাঠান যোগ করেন ৮৭ রান। উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়ার আগে পান্ডের ব্যাট থেকে আসে ৪৮ রান। ৩০ বল মোকাবেলা করে তিনি দুটি বাউন্ডারির সাথে তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে আবারো বোলিং আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। এসেই নিজের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে সাজঘরে ফেরত পাঠান জেসন হোল্ডারকে। হেনরিকসের হাতে ধরা পড়ে ব্যক্তিগত ৩ রানে ফেরেন এই ক্যারিবীয়। মুস্তাফিজের করা তৃতীয় ওভারে কলকাতা ৯ রান তুলে নেয়। আর তার শেষ ওভারে সাকিব-পাঠান ক্রিজে থাকলেও নিতে পারেন মাত্র ৩ রান।
ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন সাকিব। ১০ বলে মাত্র ৭ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। ৩৪ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন উইসুফ পাঠান।
হায়দ্রাবাদের হয়ে মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে একটি উইকেট দখল করেন। ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান দীপক হুদা। ৪ ওভারে ৩১ রান খরচ করে একটি উইকেট তুলে নেন স্রান। আর ৪ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার ৩১ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট।
এর আগে টুর্নামেন্টে প্রথম দেখায় (১৬ এপ্রিল) নিজেদের মাঠেই কলকাতার কাছে আট উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল সানরাইজার্স।
১৭২ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে হায়দ্রাবাদের দলপতি ডেভিড ওয়ার্নার ১৬ বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান ৩০ বলে চারটি চার আর তিনটি ছক্কায় করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৫১ রান।
তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে নামান ওঝা ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ১২ বলে একটি বাউন্ডারি আর দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৯ রান করা যুবরাজ সিংকে ফেরান সাকিব। কেন উইলিয়ামসন করেন ৭ রান।
এছাড়া, দীপক হুদা ২, হেনরিকস ১১ রান করে বিদায় নিলে জয়ের বন্দরে পৌঁছা সম্ভব হয়ে উঠেনি হায়দ্রাবাদের।
কলকাতার হয়ে সুনীল নারাইন ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে তিনটি উইকেট দখল করেন। সাকিব ৪ ওভারে ৩৪ রানের বিনিময়ে নেন একটি উইকেট। ৪ ওভার বল করে ২৮ রান খরচায় দুটি উইকেট পান কুলদীপ যাদব।
পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা গুজরাট লায়ন্সের সংগ্রহ ১৪ ম্যাচে ১৮। ১৪ ম্যাচ খেলা হায়দ্রাবাদ ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে কলকাতা।
সানরাইজার্স একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, যুবরাজ সিং, দীপক হুদা, ময়েজেস হেনরিকস, নামান ওঝা (উইকেটরক্ষক), কেন উইলিয়ামসন, ভুবনেশ্বর কুমার, করন শর্মা, মুস্তাফিজুর রহমান, বারিন্দার স্রান।
কলকাতা একাদশ: গৌতম গম্ভীর (অধিনায়ক), রবিন উথাপ্পা (উইকেটরক্ষক), মানিশ পান্ডে, সূর্যকুমার যাদব, সাকিব অাল হাসান, উইসুফ পাঠান, কলিন মুনরো, সুনীল নারাইন, অঙ্কিত রাজপুত, কুলদীপ যাদব, জ্যাসন হোল্ডার।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, ২২ মে ২০১৬
এমআর