ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘পরিবারের সবাই খুব চিন্তিত ছিলাম’

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
‘পরিবারের সবাই খুব চিন্তিত ছিলাম’

ঢাকা: ‘কাঁধের অস্ত্রোপচারের আগে কখনোই মোস্তাফিজকে হাসপাতালে থাকতে হয়নি। ইনজুরির কারণে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হাসপাতালে কয়েকবার গিয়েছে, আবার চলেও এসেছে।

এবারই প্রথম হাসপাতালের বিছানায় কাটাতে হলো তাকে। পরিবারের সবাই খুব চিন্তিত ছিল মোস্তাফিজকে নিয়ে। আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করি দ্রুতই সুস্থ হয়ে আবার খেলায় ফিরে আসবে। ’-মুঠোফোনে বাংলানিউজকে বলছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানের সেজো ভাই মোখলেছুর রহমান।

মোস্তাফিজকে ক্রিকেটার হয়ে উঠতে মোখলেছুরের অবদানের কথা কারো অজানা নয়। কালিগঞ্জের তেঁতুলিয়া গ্রাম থেকে ৪০ কিঃমিঃ দূরে সাতক্ষীরা শহরের গণমুখী সংঘের অনুশীলনে মোস্তাফিজকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যেতেন মোখলেছুর। নিজেও ভালো ক্রিকেট খেলতেন। নিজের বয়সটা পেরিয়ে যাওয়ায় মোস্তাফিজকে ক্রিকেটার বানাতে মরিয়া ছিলেন মোখলেছুর। পরিবারের অন্যদের চেয়ে ক্রিকেটটা ভালো বোঝেন বলেই মোস্তাফিজের অস্ত্রোপচার-সুস্থতার পাশাপাশি ক্যারিয়ার নিয়েও ভাবতে হচ্ছে মোখলেছুরকে, ‘এখন তো সুস্থতার ব্যাপার। তারপর বল হাতে ফেরা... কিছুটা সময় তো লাগবেই। আশা করি ওর বোলিংয়ের বৈচিত্র্য আগের মতোই থাকবে। ’

মোস্তাফিজকে নিয়ে শঙ্কা কেটে যায় ১১ আগস্ট বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়, যখন জানা যায় সফলভাবে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। লন্ডনের ক্রমওয়েল হাসপাতালের প্রখ্যাত সার্জন অ্যান্ড্রু ওয়ালেস তার কাঁধের সফল অস্ত্রোপচার করেন। সময় লাগে প্রায় ৭০ মিনিট। এ সময়টায় মোস্তাফিজের পরিবারই কেবল নয়, চিন্তিত থেকেছে পুরো দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে খোঁজ-খবর নিয়েছেন মোস্তাফিজের, সাহস দিয়েছেন কাটার মাস্টারকে। তার পাশে হাসপাতালে ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

অস্ত্রোপচারের দুই দিন আগেই লন্ডনে মোস্তাফিজের কাছে পাঠানো হয় বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীস চৌধুরীকে। মোস্তাফিজের প্রতি সবার ভালোবাসা দেখে কৃতজ্ঞতা জানালেন মোখলেছুর রহমান, ‘সবাই যেভাবে মোস্তাফিজের পাশে ছিল, তাতে আমি ও আমার পরিবারের সবাই কৃতজ্ঞ। ’

গত বুধবার (১৭ আগস্ট) জানা যায়, অস্ত্রোপচার-পরবর্তী কোনো জটিলতা নেই মোস্তাফিজের বাঁ কাঁধে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার অবস্থার উন্নতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন শল্যবিদ।

এবার ছোট ভাইয়ের দেশে ফেরার খবর পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন মোখলেছুর রহমান, ‘শিগগিরই হয়তো দেশে ‍ফিরবে মোস্তাফিজ। আমরা অপেক্ষা করছি। তারিখটা এখনো ঠিক হয়নি। দেশে আসলে বিসিবি যে পরামর্শ  দেবে সে অনুযায়ী কাজ করবে মোস্তাফিজ। ’

অস্ত্রোপচারের  আগে ও পরে মোস্তাফিজের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে মোখলেছুরের। অস্ত্রোচারের দিন নাকি একটুও ঘাবড়ে যায়নি মোস্তাফিজ, ‘ওর (মোস্তাফিজ) মাঝে ভীতি আছে বলে মনে হয়নি। সবসময় স্বাভাবিক মনে হয়েছে। যেন কিছুই হয়নি। ’

ভারতে আইপিএল থেকে ফিরে চোট থেকে সেরে উঠে সাসেক্সের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলতে ইংল্যান্ডে যান মোস্তাফিজ। তবে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পর কাঁধের চোটে পড়েন এ সময়ের আলোচিত এই পেসার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পাঁচ মাসের মধ্যে ‘কাটার মাস্টার’ সম্পূর্ণ ফিট হয়ে উঠবেন বলে আশা বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীস চৌধুরীর। টেনিস বলে বোলিং শুরু করতে পারবেন এক মাস পর থেকেই। দেশে ফিরলেই শুরু হবে তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কাজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ১৯ আগস্ট ২০১৬
এসকে/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।