ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বাংলানিউজকে মিরাজ

বাবার ইচ্ছা ছিলো আমি যেন জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হই

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
বাবার ইচ্ছা ছিলো আমি যেন জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হই ছবি: মানজারুল ইসলাম- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট পাগল ছিলাম। বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিলো লেখাপড়া শিখিয়ে আমাকে জজ- ম্যাজিস্ট্রেট বানাবে।

স্কুল পালিয়ে খেলতে যেতাম, এজন্য বাবা অনেক সময় শাসনও করতো। বাবা-মা তেমন ক্রিকেট বুঝতেন না। তারপরও অনেক বাধা-প্রতিবন্ধকতা আর কষ্ট স্বীকার করেই আমি হয়ে গেলাম ক্রিকেটার।

বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত তারকা খুলনার ছেলে মেহেদী হাসান মিরাজ।
 
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউজে তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন। এসময় তিনি আজকের মিরাজ হয়ে ওঠার গল্প তুলে ধরেন বাংলানিউজের কাছে।

বাংলানিউজ: কবে থেকে খেলা শুরু করলেন?
মিরাজ: বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানাধীন আওলিয়া গ্রামে আমার জন্ম। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আমার আগ্রহ ছিলো অনেক বেশি। তাই খুব অল্প বয়সেই চাচাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে যেতাম। অনেক সময় আমি ছোট বলে তারা আমাকে খেলতে নিতো না। তারপরও আমি খেলতে ও খেলা দেখতে যেতাম। সেই থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু।
 
বাংলানিউজ: কবে খুলনায় আসলেন?
মিরাজ: ২০০০ সালে বরিশাল ছেড়ে বাবার কর্মস্থল খুলনায় আসি। খালিশপুরের হাউজিং স্টেট কাশিপুরের ভাড়ার বাসায় উঠি।

বাংলানিউজ: খুলনায় এসে প্রথম কাদের সঙ্গে খেলতেন?
মিরাজ: স্কুল পালিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। খুলনায় এসে প্রথমে কাশিপুর মাঠে খেলেছি। তাছাড়া বিভিন্ন মাঠে, রাস্তায় আর বিএল কলেজের মাঠে খেলতাম। অনেক সময় বড়দের সঙ্গে খেলতে না পেরে হই-হুল্লোড় করতাম।

বাংলানিউজ: কার কাছে খেলা শিখে জাতীয় পর্যায়ে স্থান পেয়েছেন?
মিরাজ: আজকের আমি মিরাজের মিরাজ হয়ে ওঠার পেছনে সব থেকে বড় অবদান আমার প্রথম জীবনের খুলনার কোচ আল মাহমুদের। আমার খেলার প্রতি আগ্রহ দেখে খালিশপুর মুসলিম একাডেমির কোচ মাহমুদ ভাই সব ধরনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

বাংলানিউজ: কোন মাঠে আপনার বড় সাফল্য বলে মনে করেন?
মিরাজ: ঢাকার মিরপুর মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে ইংলিশ বধই আমার সেরা সাফল্য। এ মাঠে যেহেতু আমার বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে তাই এটাই আমার সেরা মাঠ।

বাংলানিউজ: ক্রিকেটের কী কী দায়িত্বে ছিলেন?
মিরাজ: অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬ ও ১৮ ক্রিকেটে খুলনা জেলার হয়ে খেলেছি। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে খুলনা জেলা ও বিভাগের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলাম।  

বাংলানিউজ: আপনার এ সাফল্যে কাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন?
মিরাজ: জাতীয় দলে স্থান পাওয়ার জন্য দিপু রায় চৌধুরী বেশি সহযোগিতা করেছেন। বিসিবি’র কর্মকর্তা, জাতীয় দলের সিনিয়র ভাইরা, কোচ আল মাহমুদ, কাশিপুরের বড় ভাই সাইফুল, মামুন এদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।

বাংলানিউজ: ইংলিশ বধে আপনার সংকল্প কী ছিল?
মিরাজ: এক বুক আশা আর বিশ্বাস বুকে নিয়ে ইংলিশ বধের জন্য মাঠে নেমেছিলাম। ভালো খেলার চেষ্টা করেছি। সাকিব, তামিম ভাইরাসহ সিনিয়রদের পারফরমেন্সে বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছে।

অভিষেক টেস্টের পারফরম্যান্সের পর প্রকাশিত র‌্যাংকিংয়ে মিরাজ ছিলেন ৬১তম স্থানে। বোলিং র‌্যাংকিংয়ে পা রেখেছিলেন ৬১ নম্বর দিয়ে। আর পরের ম্যাচ খেলেই এক লাফে চলে এলেন ৩৩ নম্বরে। টাইগার অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ অভিষেক টেস্ট সিরিজের দুর্দান্ত পারফর্মে ২৮ ধাপ এগিয়েছেন।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন এই সেনসেশন অভিষেক টেস্টে চট্টগ্রামে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ঢাকা টেস্টে নেন আরও ১২ উইকেট। দুই টেস্ট মিলিয়ে মোট ১৯ উইকেট তুলে নেন। যা বাংলাদেশের হয়ে এক টেস্টে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। দুই টেস্টের সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে মিরাজ ভেঙেছেন ১২৯ বছরের পুরোনো রেকর্ড।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।