দীর্ঘ দশ বছর পর মাঠের সংস্কার কাজের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ২০০৪ সালে দখল পাওয়ার পর মাঠ নতুন করে ক্রিকেটের জন্য তৈরি করেছিল বিসিবি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এখনও মাঠের ভেতরে কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। মাঠের বাহিরে উইকেটের পাথর নিয়ে কাজ করছেন মাঠ সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ৪০ জন কর্মী। পাথরের মধ্য থেকে অতিরিক্ত ঘাস বা আবর্জনা পরিষ্কার করছেন তারা। অন্যদিকে মাঠের ভেতরে উইকেটের উপর খনন কাজ চলছে।
সংস্কার কাজের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভূঁইয়া বাংলানিউজকে জানান, ‘এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। মাঠের বিশেষজ্ঞরা এটা নিয়ে কাজ করছেন। তারা পরীক্ষা চালিয়েছেন, মাটি নিয়ে গেছেন। মাঠের ছয় ইঞ্চি মাটি তুলে দিয়ে ঘাস লাগানোর ব্যবস্থা করছি। এজন্য মাটির স্যাম্পল নিয়ে গেছেন তারা। অচিরেই যাচাই-বাছাই করে তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন। তারপরেই আমরা কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারবো। পাশাপাশি মাটির উপরে যে ঘাস লাগানো হবে, তা ভারত থেকে আনা হবে। তার প্রক্রিয়াও চলছে। ’
২০১৩ সালে মরা ঘাস তুলে নতুন ঘাস লাগানোর কিছু কাজ হয়েছিল। এই লম্বা সময়ে শের-ই-বাংলার ড্রেনেজ সিস্টেমের কার্যকারিতা কিছুটা কমে আসে। এখন যা আছে তা কাজ চালাতে যথেষ্ট। তারপরও মাঠের সার্বিক দিক আরও উন্নতি করতে এই সংস্কারের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বিসিবি।
হানিফ ভূঁইয়া বাংলানিউজকে জানান, ‘পুরো মাঠের যে ঢাল, অনেকদিন হয়ে গেলে ঢালের একটু অবনতি হয়, তাই ঢাল যেন ঠিক হয় এবং ড্রেনেজ সিস্টেমটা যাতে আরও সুষ্ঠুভাবে কাজ করে এ নিয়ে কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা। ’
দেশি কানসালটিং ফার্ম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান একটি ফার্মের সাহায্য নিচ্ছে বিসিবি। এই কাজের সময় মাঠের উইকেটগুলোতে হাত দেয়া হবে না। এমনিতে বিপিএলের পর থেকে উইকেট নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ চলছে। সংস্কার শেষে উইকেটগুলো আরও ভালো আচরণ করবে বলে বিশ্বাস গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যানের।
মাঠ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অচিরেই শুরু হবে মাঠের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন কাজ। ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার, মাঠের নিচে থাকা পাইপ পরিবর্তন, বালু ফেলা-সরানোর মতো কাজ হবে। তবে মাঠের উচ্চতা একই থাকবে বলে জানানো হয়।
ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে দেশ ত্যাগ করেছে টাইগাররা। অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকার বাহিরে। দেশের স্থানীয় ক্রিকেটাররাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাই বিসিবির প্রাঙ্গন ফাঁকা হয়ে গিয়েছে।
এদিকে, বিসিবির একাডেমি মাঠের টুকিটাকি সংস্কার কাজ করতে দেখা গিয়েছে। হোম অব ক্রিকেটের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে সকাল থেকেই একাডেমির মাঠের সংস্কার কাজে সক্রিয় দেখা গেছে। একাডেমি মাঠের উইকেট নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে এই শ্রীলঙ্কানকে। অন্যদিকে, জিমনিসিয়ামে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবের স্থানীয় ক্রিকেটারদের ওয়ার্কআউট করতে দেখা গেছে। সকাল থেকেই ফিটনেস ঠিক রাখতে ঘাম ঝরাচ্ছেন তারা।
অচিরেই সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী গ্রাউন্ডস কমিটি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই পুরো মাঠের সংস্কার কাজ শেষ করা যাবে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
জেএইচ/এমআরপি