ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

লড়লেন মুশফিক, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে লঙ্কানরা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৭
লড়লেন মুশফিক, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে লঙ্কানরা ছবি: সংগৃহীত

গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার ৪৯৪ রানের জবাবে তৃতীয় দিন নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯৭.২ ওভারে ৩১২ রান তুলতে সবকটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুশফিক-সৌম্য-তামিম-মিরাজদের ব্যাটে ভর করে এই সংগ্রহ দাঁড়ায়। তারপরও ১৮২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার অপেক্ষায় লঙ্কানরা। বৃষ্টির কারণে দিনের খেলা শেষ হওয়ার প্রায় ৩৯ ওভার আগেই ম্যাচ স্থগিত হয়।

তৃতীয় দিনের শুরুটা ভালো হয়নি সফরকারীদের। আগের দিন দুই উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান তুলেছিল টাইগাররা।

তৃতীয় দিন সেখান থেকে শুরু করে ১৯২ রানে ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা। কিন্তু এরপর মুশফিক ও মিরাজের ব্যাটে ফলোঅন এড়ায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় দিন তামিম ইকবালের সঙ্গে রেকর্ড জুটি গড়া সৌম্য তৃতীয় দিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সুরাঙ্গা লাকমালের বলে ব্যক্তিগত ৭১ রানে বিদায় নেন তিনি। ১৩৭ বল খেলা বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান আটটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছিলেন।

সৌম্য‘র বিদায়ের পর উইকেটে এসে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন সাকিব আল হাসান। কিছুটা টি-টোয়েন্টি মেজাজেই খেলেন তিনি। মনে হচ্ছিল পিএসএলে খেলে এসে সেই ঘোর এখনও কাটাতে পারেননি। সানদাকানের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নিরোশান দিকওয়ালার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ১৯ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২৩ করেন তিনি। প্রস্তুতি ম্যাচেও সাকিব ৪৬ বলে করেছিলেন ৩০ রান।

দিলরুয়ান কুমারার বলে আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিজেকে হারিয়ে খোঁজা সিনিয়র এই মিডলার্ডার শটপিচ বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন। ২৬ বলে একটি চারে ৮ রান করেন তিনি। মাঠে এসে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাশ কোনো অবদান রাখতে পারেননি। লঙ্কান অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথের প্রথম শিকার হন তিনি। ব্যক্তিগত ৫ রানে গুনারত্নেকে ক্যাচ দেন তিনি। বাংলাদেশের লেজ অনেকটাই বেরিয়ে আসে। তবে, ঘুরে দাঁড়ান গত সফরে এই ভেন্যুতে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মিরাজ।

দারুণ খেলে সাদা পোশাকের ১৬তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। এরপর মুশফিক ও মিরাজের ব্যাটে ফলোঅন এড়ায় বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতে টাইগারদের ২৯৫ রানের দরকার ছিল। ৯১তম ওভারে বিদায় নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ব্যক্তিগত ৪১ রানে পেরেরার বলে এলবির ফাঁদে পড়েন মিরাজ। মুশফিক-মিরাজ জুটিতে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ১০৬ রান। ৭৭ বলে ৫টি বাউন্ডারি হাঁকান মিরাজ। দলীয় ২৯৮ রানের মাথায় টাইগারদের সপ্তম ব্যাটসম্যান হয়ে ফেরেন তিনি। পরের বলেই তাসকিন এলবির ফাঁদে পড়েন। দারুণ খেলতে থাকা মুশফিক জুটির অভাবে কিছুটা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। পরে হেরাথের বলে ব্যক্তিগত ৮৫ রানে বোল্ড হন তিনি। ১৬১ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় তিনি নিজের ইনিংস সাজান।

বাংলাদেশ ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মোস্তাফিজুর রহমান। চা-বিরতি থেকে ফিরে মাত্র দুটি বলই খেলতে পারে সফরকারীরা। রঙ্গনা হেরাথের তৃতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৪ রানে বিদায় নেন তিনি। শুভাষিশ শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশ অলআউট হলে খেলা বৃষ্টির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি স্বাগতিকদের।

এর আগে দ্বিতীয় দিন শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। আর ব্যাটিংয়ে নেমে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি গড়েন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ওপেনিং জুটিতে আগের রেকর্ডটিতেও ছিলেন তামিম। ২০১৩ সালের কলম্বো টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে জহুরুল ইসলামকে নিয়ে ৯১ রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন দেশসেরা ওপেনার। এদিন তামিম ও সৌম্য মিলে ১১৮ রানের জুটি গড়েন।

তবে দারুণ খেলতে থাকা তামিম এক হাস্যকর রান আউটে ক্রিজ ছাড়েন। সানদাকানের বলে খোঁচা দেন। কিন্তু বল উইকেটরক্ষক নিরোশান দিকওয়ালার কাছে চলে গেলে আম্পায়ারের কাছে ক্যাচের আবেদন করে লঙ্কানরা। তবে কি বুঝে রান নেওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন তামিম। আর তাতেই দিকওয়ালা স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তামিম হয়তো ভেবেছিলেন বল ধরতে পারেননি উইকেটরক্ষক। তিনি ১১২ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে ৫৭ রান করেছিলেন।  

তামিমের পর উইকেটে থিতু হতে পারেননি মুমিনুল হক। এসে মাত্র ৭ রান করে দিলরুয়ান পেরেরার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। কিন্তু দিনের বাকি সময়টা আর কোনো ভুল হতে দেননি সৌম্য ও মুশফিকুর রহিম। অসাধারণ খেলা সৌম্য ১৩৩ বলে সাতটি চার ও এক ছক্কায় ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে ১ রানে মাঠ ছেড়েছেন অধিনায়ক মুশফিক।

এর আগে কুশাল মেন্ডিসের ১৯৪ রানের সুবাদে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৯৪ করে শ্রীলঙ্কা। হাফসেঞ্চুরি করেন আসেলা গুনারত্নে, দিকওয়ালা ও পেরেরা। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। দুটি উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান। আর একটি করে উইকেট দখল করেন তাসকিন আহমেদ, শুভাষিশ রায় ও সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, ০৯ মার্চ, ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।