মাশরাফি তো নিজেই বলেন, ‘স্বপ্ন যদি থাকে তবে সেটিকে তাড়া করো। হয়তো বা হবে হয়তো বা না।
ভক্তের অবুঝ মন তো সেই প্রিয় ক্রিকেটে থেকে যাওয়ার চেষ্টাকুটুই চায়! হোক না আরেক বার- মাতি না অবসর ভেঙে মাঠ মাতানোর উচ্ছ্বাসে ফের! চলে তো যেতেই হবে- কেউ আটকাবে না, কিন্তু প্রশ্ন একটাই- আর কটা দিন থেকে গেলে হতো না লিডার!
আপনি কি চান মাশরাফি খেলুক! এই শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ম্যাশের প্রত্যাবর্তনের সুর। শত শত পোস্ট, স্টাট্যাসে মাশরাফিকে ফিরে পাওয়ার আকুতি!
এমনকি ম্যাশের জেলার রূপগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ড ও আলাদাতপুরে নড়াইল-যশোর সড়ক অবরোধ করে ‘মাশরাফি তুমি ফিরে এসো’ শিরোনামের ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। কর্মসূচি আছে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামকে ঘিরেও।
প্রকৃত অর্থে যে চেষ্টা করেছেন তিনি, সেটি বিস্ময়! সাতবার পায়ে অস্ত্রোপচারের পরও তিনি দাপিয়ে বেড়ান মাঠ। হাঁটুতে টাইট ব্যান্ডেজ টেনে তোলেন প্রতিটি বল করতে দৌড়ানোর আগে!
শুধু তাই নয়, লাখো মানুষের বাঁচার শক্তি মাশরাফি। কেবল ক্রিকেটই নয়; জীবন যুদ্ধের অনুপ্রেরণাও তিনি। কী করে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, নিজেকে বদলে ফেলতে হয়, না দমার এক রাশ গোলা বারুদ মনে-মননে নিয়ে কী করে এগোতো হয়, সর্বোপরি স্বপ্ন কী করে দেখতে হয়- এসবই মাশরাফি নামের ‘কিংবদন্তীর’ কাছ থেকে শেখা। তিনি নেতা, লিডার। জীবন ও জীবন ধারণের লিডার- ক্রিকেটে না থাকলেও কিংবদন্তী রয়ে যাবেন কোনো না কোনো ক্ষেত্রের লিডার হয়েই।
ম্যাশকে ‘কিংবদন্তী’ উপাধি তো তার সতীর্থরাই দিয়েছেন।
তামিম ইকবাল এক স্ট্যাটাসে লেখেন, আমাদের অধিনায়ক মাশরাফি ভাইকে নিয়ে আপনি যতো বেশিই বলেন; কম হয়ে যাবে। তার দখলে হয়ত কোনো ওয়ার্ল্ড রেকর্ড নেই, অথবা অন্যান্য দেশের কিংবদন্তীদের মতো ৪০০ বা ৫০০ উইকেট নেই। কিন্তু, এখানে কোনো সন্দেহ নেই যে বাংলাদেশ ক্রিকেটে তিনি নিজের মতো করে তার চিহ্ন রেখে গেছেন। ব্যক্তি হিসেবে মাশরাফি আমার কাছে জীবন্ত কিংবদন্তী!
একই কথা বলেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ। আর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেছেন, ম্যাশ তার কাছে সবসময়ই ‘স্পেশাল’।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেট ভক্ত আরিফুল ইসলাম তূর্য ‘বিদায় মাশরাফি’ উল্লেখ করে বলেন, এক মাশরাফিকে জয় দিয়ে বিদায় দেওয়ার জন্য ৮৬ স্ট্রাইক রেটের ইমরুল কায়েস ব্যাট হাতে বিধ্বংসী হয়ে যেতে পারেন, ফিল্ডে রিয়াদ, সাব্বির, মোসাদ্দেক, মিরাজদের ওপর জন্টি রোডস ভর করে, বহুদিন পর সেই মায়াবী মুস্তাফিজকে ফিরে পাওয়া যায়, সাকিবের সেই পুরানো ধার ফিরে আসে বোলিংয়ে, এমনকি ব্যাটিংয়েও, শুধু তাই নয় মুশফিক পর্যন্ত উইকেটের পেছনে হয়ে যান চিতা বাঘের মতো ক্ষিপ্র!
সাংবাদিকতার ছাত্র সাদ্দিফ অভির মতে, জীবনযুদ্ধ আর ক্রিকেট যুদ্ধ দুয়ে মিলে মাশরাফি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান সাফল্যের পেছনে রয়েছে মাশরাফির নেতৃত্ব। তার শেষ টি-২০, জয় নিশ্চিত করে বাড়ি যাবে পাগল ছেলেটা, আমি জানতাম। ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না আর বিদায়ও দেবো না। শুধু মনে মনে নিজেকে বোঝাবো বাংলাদেশের ক্রিকেটের পিতা একজনই তিনি!
আরও পড়ুন:
আমার জন্য রুবেলদের সুযোগ হচ্ছে না, চাই নতুনরা আসুক
আমার থেকে বেশি খারাপ আর লাগবে না কারো
মাশরাফি ভাই আমার কাছে স্পেশাল
‘ওনার ডিসিশনটা আমরা মেনে নিতে পারিনি’
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৭
আইএ/এমজেএফ