ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘এর চাইতেও বড় শাস্তি থাকলে দিতাম’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩০ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
‘এর চাইতেও বড় শাস্তি থাকলে দিতাম’ বাংলাদেশ ক্রিকেটের শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান শেখ সোহেল/ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে লালমাটিয়ার বোলার মো: সুজন মাহমুদের ৪ বলে ৯২ রান ও ফিয়ার ফাইটার্স বোলার তাসনিম হাসানের ১.১ ওভার বল করে ৬৯ রানের বিষয়টির তদন্ত শেষে দুই বোলারসহ ক্লাবের কোচ, অধিনায়ক ও আম্পায়ারদের  দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

দুই বোলার সুজন ও তাসনীম নিষিদ্ধ হয়েছেন ১০ বছরের জন্য। দুই দলের অধিনায়ক, ম্যানেজার ও কোচ ৫ বছরের জন্য ও দুই ক্লাব লালমাটিয়া ও ফিয়ার ফাইটার্স আজীবন নিষিদ্ধ।

পাশাপাশি  খেলা ঠিকমতো পরিচালনা করতে না পারায় আম্পায়াররাও ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন।

তবে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, উল্লেখিত শাস্তির চেয়ে আরও বড় কোনো শাস্তি থাকলে তা ওই দুই বোলার, ক্লাব ও ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দেয়া হতো বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান শেখ সোহেল।

‘আমাদের ক্রিকেট আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক উপরে অবস্থান করছে। আমরা কোনোভাবেই আমাদের ক্রিকেটকে নিচে নামতে দিতে চাই না। এই তদন্ত শুরুর পর আমি একাধিকবার বলেছি এ জাতীয় ঘটনায় আমরা কোনো ছাড় দিব না। এটি একটি মারাত্মক ঘৃণ্য অপরাধ। এর চাইতেও বড় শাস্তি থাকলে আমরা দিতাম। ’

মঙ্গলবার (২ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মিডিয়া লাউঞ্জে তিনি গণমাধ্যমকে একথা জানান। সুজন ও তাসনিমের অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদের বিষয়টিকে শেখ সোহেল দেখছেন লাল-সবুজের ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় প্রতিপন্ন করার দুরভিসন্ধি হিসিবে। তাই তদন্তটিও করেছেন বেশ শক্ত হাতে।

আকরাম খান, জালাল ইউনুস ও শেখ সোহেলকে নিয়ে করা বিসিবি’র তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি বিষয়টিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছিল আইসিসির তদন্ত দল আকসুও।

দুই পক্ষের তদন্ত শেষে এই শাস্তি নেয়া হয়েছে বলে জানান শেখ সোহেল, ‘আকসুও আমাদের একই প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা প্রতিটি খেলোয়াড় এবং মাঠে যারা উপস্থিত ছিলেন এমন অনেকের সাথে কথা বলেছি। কথা বলার পর আমরা দেখেছি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের ক্রিকেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিন্দিত হয়েছে। ’

দুই বোলার কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে কি না? গণমাধ্যমের করা এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ সোহেল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন যে যদি টিম ম্যানেজমেন্ট আদেশ না দেয় তাহলে কোনো বোলার এ জাতীয় কাজ করার সাহস পায় না। ’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘দুই ম্যাচেই ফিক্সিংয়ের কোনো ব্যাপার ছিল না। বোলার টাকা পেয়েছে বা এ জাতীয় কিছু না। কিংবা এই দুই দল হেরে গেলে রেলিগেশনে যাবে বা জিতলে সেমিফাইনালে উঠবে এ জাতীয় কোনো ব্যাপারও ছিল না। পুরো তদন্ত করে পেয়েছি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করা হয়েছে। ’

প্রতিবাদের ভাষা বহুকরকমের হতে পারে। তবে সুজন মাহমুদ ও তাসনিম যে পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করেছেন সেটা এদেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করেছে বলেই বিসিবি এমন শাস্তি দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো।

দেশের ক্রিকেটের বর্তমান গৌরবোজ্জ্বল সুনামকে অব্যাহত রাখতে আগামীতেও তাদের এমন তৎপরতা অব্যাহত থাকবে এটিই ক্রিকেটপাগল এই জাতির প্রত্যাশা!

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, ২ মে ২০১৭
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।