ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিব-মোসাদ্দেকের পর আফ্রিদিও সাজঘরে

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
সাকিব-মোসাদ্দেকের পর আফ্রিদিও সাজঘরে ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ক্রিস গেইলের সেঞ্চুরিতে বিপিএল ফাইনালে রংপুর রাইডার্সের ২০৬ রানের জবাবে ধুঁকছে ঢাকা ডায়নামাইটস। ২৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সাকিব-জহুরুল জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে আবারো ব্যাকফুটে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি ঢাকার সংগ্রহ ১১ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ৮৭। জহুরুল ইসলাম ২৮ রানে ব্যাট করছেন।

 অপর প্রান্তে সুনীল নারাইন।

নবম ওভারের মাথায় সাকিব আল হাসানকে (১৬ বলে ২৬) বোল্ড করে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমণি বনে যান বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। ঢাকার স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ৭১। তিন রান যোগ হতেই মোসাদ্দেক হোসেনের (১) স্ট্যাম্প ভাঙেন রবি বোপারা।  শহীদ আফ্রিদিকে (৮) ফিরিয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতেন অপু। ৮৭ রানে সাত উইকেটের পতন ঘটে।  

শুরুর দিকে ১ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে ঢাকা। দলীয় ১৯ রানে সাজঘরে ফেরেন এভিন লুইস (১৫)। প্রথম ওভারেই মেহেদী মারুফকে (০) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। জো ডেনলিকে (০) পরের ওভারে সাজঘরে পাঠান সোহাগ গাজী।

চতুর্থ ওভারে গাজীর বলে লং-অনে মাশরাফির চমৎকার ক্যাচে পরিণত হন লুইস। ১০ রান যোগ হতেই রুবেল হোসেনের বলে গেইলের হাতে ধরা পড়েন পোলার্ড (৫)।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২০৬ রান তোলে মাশরাফির রংপুর। বিপিএলের ইতিহাসে নিজেরই করা সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড ভেঙে ৬৯ বলে ১৪৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন গেইল। স্ট্রাইক রেট ২১১.৫৯। তাতে ছিল ৫টি চার ও ১৮টি ছক্কার মার।

শতক পূরণ করেন ৫৭ বলে। এবারের আসরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে পঞ্চম। আরেকটি ‘গেইল শো’ উপভোগ করলেন দর্শকরা। চারদিন আগে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ৫১ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত থাকেন ‘ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব’। ছাড়িয়ে যান সাব্বির রহমানকে। গতবার রাজশাহীর জার্সিতে ১২২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাব্বির।

শিরোপা লড়াইয়ে গেইলকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৪৩ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থেকে যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। সর্বোচ্চ রানস্কোরারের তালিকায় নাম্বার ওয়ান পজিশনে উঠে এসেছেন গেইল। ১১ ম্যাচে দুই ফিফটি ও দুই সেঞ্চুরিতে তার রান ৪৮৫। ৩৮১ রান (এই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামার আগে) নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছেন ঢাকার এভিন লুইস।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসকে (৩) ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু এনে দেন সাকিব। এরপর ঢাকার বোলারদের ওপর দিয়ে রীতিমতো স্টিমরোলার চালান ৩৮ বছর বয়সী গেইল। ম্যাককালামকে নিয়ে গড়েন ২০১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি।

পঞ্চম আসরের লিগ পর্বে দু’বারের মুখোমুখি দেখায় রংপুর ও ঢাকা দু’দলই এক ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। প্রথমবারের মতো বিপিএল ফাইনাল খেলছে রংপুর রাইডার্স। ২০১৫ সালে তারা প্লে-অফ খেলেছিল। সেবার অধিনায়ক ছিলেন সাকিব অাল হাসান।

রংপুর ও ঢাকা দু’দলই লিগ পর্বের নাম্বার ওয়ান দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চূড়ান্ত মঞ্চের টিকিট কাটে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে তামিমদের মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯৫ রানের দাপুটে জয়ে সরাসরি ফাইনাল নিশ্চিত করে ডায়নামাইটস।

এলিমিনেটর ম্যাচে গেইলের অপরাজিত ঝড়ো সেঞ্চুরিতে খুলনা টাইটান্সকে বিদায় করে রংপুর। দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হওয়ার মিশনে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জ্বলে ওঠেন অপরাজিত সেঞ্চুরিয়ান চার্লস ও ম্যাককালাম (৪৬ বলে ৭৮)। ১৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৬ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় ২০১৫ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

বিপিএলের আগের চারটি শিরোপাই মাশরাফি ও সাকিবের দখলে। প্রথমবার তারা ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি। সাকিরের সামনে ব্যাক-টু-ব্যাক শিরোপা জয়ের চ্যালেঞ্জ। অধিনায়ক হিসেবে চারবার ট্রফির জয়ের স্বাদ নিতে মুখিয়ে আছেন মাশরাফি। সাকিবের এটি তৃতীয় ফাইনাল (তিনবারই ঢাকার হয়ে, প্রথম ও তৃতীয় আসরে ছিলেন অন্য টিমে)। দ্বিতীয় এডিশনে মাশরাফির অধীনে খেলেছিলেন।

প্রথম দুই আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে শিরোপা জিতিয়েছেন মাশরাফি। তৃতীয়বার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে যোগ দিয়ে বাজিমাত করেন। এবার ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’র হাত ধরে রংপুর রাইডার্স বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন হবে নাকি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তকমাটা ঢাকার গায়েই থাকবে সেটিই এখন দেখার বিষয়!

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।