ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

টেস্টে ফেরার সার্টিফিকেট পেলেন মাশরাফি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৮
টেস্টে ফেরার সার্টিফিকেট পেলেন মাশরাফি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চোট তার নিত্যসঙ্গী। চোটের সঙ্গে তাকে প্রতিনিয়তই লড়তে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ক্লান্ত হননি। বরং বারবারই সংশপ্তকের মতো উঠে দাঁড়িয়েছেন। নতুন উদ্যমে ফিরেছেন মাঠে। চোটজর্জর হাঁটু তাই মাঠে নামতে হয় ক্যাপ পড়ে।

এত চড়াই উৎরাইয়ের পরেও শতভাগ উজাড় করে দিতে কুণ্ঠা বোধ করেন না। বুক চিতিয়ে লড়েন।

তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের দিন বদলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

ইনজুরি আক্রান্ত হাঁটুতে সাতবার অস্ত্রোপচারের পর মাশরাফি সবশেষ টেস্ট খেলেছেন সেই ২০০৯ সালে। প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও প্রিয় ফরমেটে এরপর আর খেলা হয়নি তার।

কিন্তু মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ৩৪ বছর বয়সী মাশরাফি সম্পর্কে রোমাঞ্চকর এক তথ্য দিলেন তার চিকিৎসক, অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত শল্যবিদ ডেভিড ইয়াং। বললেন আবার টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারবেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।

‘প্রতিটি দলেরই একজন নেতা প্রয়োজন। যিনি শুধু ক্রিকেটার হিসেবেই নন, সবসময়ই একজন নেতার ভূমিকা পালন করবেন। সে তার দলের প্রয়োজনে অবশ্যই টেস্ট খেলবে। বিষয়টি এমন না যে তাকে সেরা খেলোয়াড় হতে হবে কিংবা সুপারস্টার হতে হবে। আমার মনে হয় মাশরাফি তেমনই এক নেতা। সে টেস্ট খেলার মতো অবস্থায় আছে। ’

এর চাইতে বড় সার্টিফিকেশন আর কী হতে পারে? যে ডেভিড ইয়াংয়ের হাতে মেলবোর্নে মাশরাফির হাঁটুতে ৬ বার অস্ত্রপচার হয়েছে। তার মতো ব্যক্তিত্ব একথা বলার পর নিশ্চয়ই আর মাঠের বাইরে বসে সতীর্থদের সাদা পোশাকের লড়াই দেখবেন না ক্যাপ্টেন মাশরাফি।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি বিসিবি’র চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টদের সঙ্গে কর্মশালা শেষে সংবাদ মাধ্যমের সামনে ডেভিড একথা বলার পরপরই মাশরাফি মুখে মৃদু হাসি নিয়ে ‘না’ বলে উঠলেন। কিন্তু ডেভিডকে কে আটকায়?

একের পর এক মাশরাফির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে গেলেন ডেভিড। যেন কেউ তার অনেক দিনের বন্ধ মুখটি খুলে দিয়েছে, ‘মাশরাফি একজন পেশাদার প্লেয়ার যে কিনা তার দেশের প্রয়োজনে নিবেদিত প্রাণ। এটা আমার জন্য আনন্দের যে ওর ক্যারিয়ারে অল্প সময়ের জন্য হলেও আমি ছিলাম। ওর যে বিষয়টা আমার ভালো লাগে সেটা হলো মানুষ হিসেবে সে অসাধারণ এবং তার হৃদয়টা অনেক বড়। সে একজন দাতাও যে তার আশপাশের মানুষ, দল এমনকি দেশ নিয়েও ভাবে। ওকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের গর্ব করা উচিত। সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক বড় এক দূত। ’       

যে ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে নতুন জীবন পেয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে দূরে, তার কাছ থেকেই এমন প্রত্যায়নপত্র পাওয়ার পর আবারো কী টেস্টে দেখা যাবে মাশরাফিকে? যেতেও পারে।

কেননা চোটে পড়ার পর একথা অনেকবারই শোনা গেছে যে তিনি আর মাঠে ফিরবেন না। কিন্তু সব আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে মাশরাফি বারবারই স্বরূপে ফিরেছেন। ক্রিকেটের জন্য যে মানুষটি নিজের জীবনও বাজি রাখতে পারেন, তার জন্য টেস্ট ক্রিকেট সে আর কী এমন ব্যাপার? কেননা, নাম যে তার মাশরাফি বিন মর্তুজা, লড়াকু এক যোদ্ধা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।