ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

শের-ই-বাংলার উইকেটে নির্ভার শ্রীলঙ্কাও

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৮
শের-ই-বাংলার উইকেটে নির্ভার শ্রীলঙ্কাও দিনেশ চান্দিমাল-ছবি:শোয়েব মিথুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে শ্রীলঙ্কান দলপতি দিনেশ চান্দিমালকে অধিকাংশ সময়ই উইকেট নিয়ে কথা বলতে হলো। জহুর আহমেদের অভিজ্ঞতাটি তাদের ভালো ছিল না। ম্যাচ শেষে উইকেট নিয়ে কটুমন্তব্য করতে ছাড়েননি কোচ হাথুরুসিংহে, টিম ম্যানেজমেন্ট এমনকি লঙ্কান প্লেয়াররাও। উইকেটের সমোলোচনায় সরব ছিলেন।

এমন প্রেক্ষাপটে সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা বারবারই তার কাছে শের-ই-বাংলার উইকেট নিয়ে জানতে চাচ্ছিলেন। উত্তরে চান্দিমালও ছিলেন বেশ সপ্রতিভ।

শুরুটা করেছেন হোম অব ক্রিকেটের ভেন্যুর নেতিবাচক দিক নিয়ে। তার দৃষ্টিতে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সিরিজের পুরোটাতেই ছিল স্পিন ট্র্যাক। ব্যাটসম্যানরা নাকি কোন সুবিধাই পাননি। যার পুনরাবৃত্তি ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ঢাকা টেস্টেও হবে, সেটা তিনি অনুশীলনে এসে উইকেট দেখেই আঁচ করতে পেরেছেন। ‘উইকেট দেখে শুকনো মনে হলো। স্পিনাররাই ভাল করবে। ’

তবে চান্দিমালকে অবশ্য বেশ নির্ভারই মনে হলো। কেনই বা হবেন না? স্পিন শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চাইতে তারা ঢেঢ় এগিয়ে, এটা তিনি ভালো করেই জানেন। বাঁহাতি অভিজ্ঞ রঙ্গনা হেরাথ, ডানহাতি দিলরুয়ান পেরেরা এবং চায়নাম্যান সান্দাকানেরমতো বৈচিত্রময় স্পিনারদের সমন্বয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কঠিন থেকে কঠিনতর সময় উপহার দিতে পারবে, সেটা তিনি চোখ বন্ধ করেই বলে দিতে পারেন।

এর প্রমানও কিন্তু আগের টেস্টেই সাগরিকায় পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসে না পারলেও ওমন ব্যাটিং ট্র্যাকেও চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে টাইগার ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রবল চাপ কিন্তু তারা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পঞ্চম দিনেও তাদের সেই চাপ অব্যাহত ছিল। যদিও মুমিনুল-লিটনের জুটি তা উড়িয়ে দিয়েছে।

পক্ষান্তরে স্বাগতিক স্পিনারদের কোনো দাপটই দেখা যায়নি। তাইজুল তো ২শ’ রান দিয়ে টেস্টে রেকর্ডই করে বসলেন। আরেক বাঁহাতি সানজামুলও ছিলেন নিস্প্রভ।

ফলে ঢাকা টেস্টে টাইগারদের একাদশে পরিবর্তনের একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ‘অভিজ্ঞ আব্দুর রাজ্জাক আসছেন’। কিন্তু তাতেও কী বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার স্পিন শক্তির সমকক্ষতা অর্জন করতে পারবে? সম্ভবত না। অতটা বৈচিত্রময়ও হবে না। ধরেই নিচ্ছি আব্দুর রাজ্জাক এলেন। এতে করে দুজন বাঁহাতি স্পিনার খেলতে পারবে স্বাগতিক শিবিরে। অপরজন তাইজুল। মিরাজ অফস্পিনার। সেই এক ঘেয়েমি স্পিন আক্রমণ। দলপতি হিসেবে চান্দিমাল বিষয়টি হয়তো আরও ভাল বোঝেন। ‘সান্দাকান আমাদের উইকেট টেকিং বোলার। পিচ ভালো হলে রঙ্গনা ও দিলরুয়ান পেরেরাও দারুণ করবে। ’

তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি সান্দাকানকেই তুরুপের তাস ধরে নিয়েছেন, ‘আমি ওকে উইকেট নিতেই বোলিংয়ে ডাকবো। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তাকে ভাল খেলেনি সেটা আমরা দেখেছি। ’

একথা ঠিক ঘরের মাঠে এই স্পিন উইকেটকে শতভাগ কাজে লাগিয়েই ২০১৬ সালে ইংল্যান্ড ও তার পরের বছর অস্ট্রেলিয়া বধের মহাকাব্য রচনা করেছিল বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতায় হয়তো স্বাগতিকরা আরেকটি মাহাকাব্য রচনা করতে চাইছে। কিন্তু তাদের ভুলে গেলে চলবে না, শ্রীলঙ্কা এই উপমাহাদেশেরই একটি পরাশক্তি। যাদের স্পিন খ্যাতি সার্কভুক্ত যে কোনো দেশের চাইতে চূড়ায়ই রয়েছে।

কাজেই স্পিন ট্র্যাকে বাংলাদেশের সাথে তাদের নির্ভার থাকাটা আর যাই হোক স্পর্ধা হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।