ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

শান্তি খুঁজে ফিরছেন ‘আনলাকি’ তাসকিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
শান্তি খুঁজে ফিরছেন ‘আনলাকি’ তাসকিন শান্তি খুঁজে ফিরছেন ‘আনলাকি’ তাসকিন-ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তাসকিন নিজেই বলছিলেন ‘২০১৮ সালটা ভাল গেল না। একের পর এক ইনজুরি। নিজেকে আনলাকি মনে হচ্ছে।’ সত্যিই দারুণ অভাগা তাসকিন। লাল সবুজের ক্রিকেটের বর্তমান একমাত্র গতিতারকা হয়েও অভিশপ্ত ইনজুরির কারণে গেল আট মাস জাতীয় দলের চৌহদ্দিতে ঢুকতে পারেননি।

গত মার্চে নিদাহাস ট্রফি খেলতে গিয়ে পুরোনো পিঠের ব্যথার পর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের আগে একই হাতে দু’ দুটি চোট তাকে টুর্নামেন্ট বঞ্চিত করেছে।

হাতের সেই চোট থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) তৃতীয় রাউন্ডে বগুড়ার মরা উইকেটেও ৫ উইকেট নিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিলেন।

কিন্তু বিধি বাম বলেই তা বেশি দিন স্থায়ী হলো না। ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাসও ভেঙে চুরে খান খান করে দিল নতুন সাইডস্ট্রেনের ইনজুরি।

ঘটনার সূত্রপাত দু’দিন আগে রাজশাহীতে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) চতুর্থ রাউন্ডের প্রস্তুতি ক্যাম্পে বোলিংয়ের সময় মৃদু ব্যথা অনুভব করেন। ধীরে ধীরে তীব্রতা বেড়ে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে এখন তিনি প্রায় তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে।

বিষয়টি তাসকিনের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন করে তুলেছে তার বাবা আব্দুর রশিদকেও। বুধবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে গিয়ে দেখা গেল ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম খানের কক্ষের সামনে বিষণ্ণ মনে ঘোরাঘুরি করছেন। সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের দেখতেই আবগপ্রবণ হয়ে বললেন,‘দুর্ভাগ্য আমার ছেলেটার পিছু ছাড়ছে না। আপনারা সবাই দোয়া করবেন। ’

তার সঙ্গে কথোপকথনের এক পর্যায়ে থেরাপি নিয়ে বেরিয়ে আসা তাসকিনকেও ভীষণ বিষণ্ণ দেখালো। মনের খেদ হয়তো চাপিয়ে রাখতে পারেননি। তাই নিজেকেই নিজে ‘আনলাকি’ আখ্যা দিলেন। তবে এখানেই সব শেষ মানছেন না ২২ বছর বয়সী এই গতি তারকা। বরং প্রেরণা নিচ্ছেন মাশরাফিকে দেখে।

‘সত্যিই আনলাকি। আল্লাহ কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছে। তবে ফাস্ট বোলারদের ইনজুরির এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি আছে। আমাদেরই একজন লিজেন্ড বোলার মাশরাফি ভাই। ওনারও কঠির সময় এসেছে। কিন্তু সকাল বাধা অতিক্রম করে ফিরতে পেরেছে। আমার বিশ্বাস আমি যদি সুস্থ থাকি আবার সব ঠিক থাকবে। ’

একর পর এক ইনজুরি তাকে মানসিকভাবেও প্রবল চাপে রেখেছে। কারণটিও অযৌক্তিক নয়। ফর্মহীনতা বা অন্য কিছু না, শুধুমাত্র ঘাতক ইনজুরির কারণে প্রায় বছর হতে চললো তিনি জাতীয় দলের বাইরে। ফলে কিছুতেই শান্তি খুঁজে পাচ্ছেন না এই টাইগার ডানহাতি ফাস্ট বোলার। ঠিক যেন পানিবীহিন মাছের মতোই তার অবস্থা। পানি থেকে তুলে বাইরে রেখে দিলে একটি মাছের যে কাতরতা বোধ হয়, তার বোধটিও এর চাইতে কোনো অংশে কম নয়। কাজেই দু’দণ্ড শান্তি ও স্বস্তির খোঁজে এখন তার প্রথম ও প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে দ্রুতই ফিট হয়ে জাতীয় দলে ফেরা।

‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়েই দলে ঢোকার ইচ্ছে ছিলো। বাট আনলাকি। মন তো চায়ই আজকে যে ম্যাচটা হচ্ছে সেটাতেও খেলি। জাতীয় দলে খেলার মতো শান্তি তো অন্য কোথাও নেই। ২০১৮ টা কঠিন সময় গেল। সামনের দিনগুলো ভাল যাবে আশা করছি। ’

‘আমি চেষ্টা করবো আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে যত দ্রুত দলে ঢোকা যায়। যদিও দলে ঢোকা আমার হাতে নেই। যেটা আমার হাতে আছে কঠোর অনুশীলন করাটা। তো আমি চেষ্টা করছি। ১১০ ভাগ দেয়ার চেষ্টা করছি। সবশেষ ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছিলাম। ওটা আমার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিলো। তো এখন ফিট থাকাটাই মূল লক্ষ্য। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।