ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘ভালো ক্রিকেটারের জন্য পরিচ্ছন্ন মাঠ নিয়ে ভাবতে হবে’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৯ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৯
‘ভালো ক্রিকেটারের জন্য পরিচ্ছন্ন মাঠ নিয়ে ভাবতে হবে’ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক

‘একটি ভালো খেলার মাঠ একজন ভালো ক্রিকেটার তৈরির মেশিন হিসেবে কাজ করে। কিন্তু আমাদের ঢাকা শহরে সেটি প্রায় অনুপস্থিত। আমাদের যে মাঠগুলো আছে সেগুলো খেলার উপযোগী করতে হবে। এজন্য আমাদেরকেই ভাবতে হবে’।

বাংলানিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক। নিচে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো- 

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?

উত্তর: অবশ্যই ভালো প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। এরইমধ্যে আমরা বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছি। আমাদের দলে অনেক ভালো ক্রিকেটার রয়েছে। আমি আশা করি বাংলাদেশ এবার অনেক ভালো খেলবে। দলের প্রতিটি সদস্যই নিজ নিজ জায়গা থেকে ভালো খেলবে। আমরা একটি দলগত প্রচেষ্টা দেখতে পাবো। বাংলাদেশ দলের জন্য আমাদের সবার পক্ষ থেকে শুভ কামনা থাকবে।

একজন ছেলে বা মেয়ের ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য মাঠের ভূমিকা কেমন বলে আপনি মনে করেন? 

উত্তর: একজন ছেলে বা মেয়ের ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য মাঠের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত একটি মাঠই তো ক্রিকেটারের জন্ম দেয়। একজন মাঠে খেলতে খেলতে ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়। ক্রিকেটার মৌলিক নিয়মগুলো আয়ত্ব করতে সক্ষম হয়। মূলত একটি মাঠ একজন ভালো ক্রিকেটার তৈরির মেশিন হিসেবে কাজ করে। ঘরের মধ্যে খেলে তো আর ক্রিকেটার হওয়া যায় না। ঘরের মধ্যে ক্রিকেট খেললে ব্যাট ধরাই শেখা সম্ভব না।  

আমাদের দেশে বিশেষ করে শহরে এই সুবিধা কতটুকু আছে? 

উত্তর: ঢাকা শহরে মানুষের তুলনায় খেলার উপযোগী মাঠ নেই বললেই চলে। সারা শহরজুড়ের শুধু বিল্ডিং। এখানে খেলার মাঠ কোথায়। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব ভালো খেলার মাঠ ছিলো সেগুলোও আর এখন নেই। আমাদের সন্তানদের জন্য খেলাধুলার উপযোগী তো দূরের কথা একটি হাঁটাচলার জন্য তেমন ভালো জায়গা মেলে না। যে কয়টি মাঠ আছে সেখানেই ছেলেমেয়েরা ভাগ করে খেলে বা নেট প্র্যাকটিস করে। এটি একজন ভালো ক্রিকেটার তৈরির ক্ষেত্রে খুব একটা ইতিবাচক নয়।  

আপনার সময়ে আপনি এই সুবিধা কেমন পেয়েছেন? 

উত্তর: আমাদের সময়ে এখনকার চেয়ে তুলনামূলক ভালো সুবিধা ছিলো। আমরা অন্তত খেলার কিছু জায়গা পেয়েছি। সেখান থেকে ভালো ক্রিকেটার তৈরি হয়েছে। আমাদের সময়ে হয়তো একাডেমিক শেখার সুবিধা এখনকার মতো ছিলো না তবে, খেলার জন্য সুযোগ পেতাম।  

সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আপনি বলছেন যে - কিভাবে তৈরি হবে ভবিষ্যতের ক্রিকেটার। কিন্তু কেন? 

উত্তর: আসলে আমি যেটা বোঝাতে চেয়েছি তা হলো, যদি আজকের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার জন্য ভালো মাঠ না পায় তাহলে ভালো ক্রিকেটার তৈরি হবে কোথা থেকে? আর আমরা কেউই এর দায় এড়াতে পারি না। যে কয়টি মাঠ আছে সেগুলোতেও ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নিয়ে খেলা শিখতে পারছে বলেও আমার মনে হয় না। তবে হ্যাঁ, কিছু কোচিং একাডেমি আছে যারা শেখাচ্ছে, কিন্তু এটি সবাই নিতে পারবে বিষয়টি এমনও নয়।

এমনিতেই ঢাকা শহরের মাঠের সংখ্যা কম। এর মধ্যে কিছু আছে পরিচ্ছন্নতার অভাবে খেলার পরিবেশ নেই। এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?

উত্তর: আসলে মাঠ নিয়ে এর আগে অনেকবার আন্দোলন হয়েছে। কিছু মাঠ দখল হয়ে আছে। অনেক মাঠ পরিচ্ছন্নতার অভাবে খেলা উপযোগিতা হারিয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে যেভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছে সেই জায়গা ধরে রাখতে এবং আরও এগিয়ে যেতে ভালো ও খেলার উপযোগী মাঠের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমাদের সবার উচিত হবে মাঠগুলোকে খেলার উপযোগী করতে এগিয়ে আসা। মাঠগুলোকে পরিচ্ছন্ন করা এবং এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

আপনি নিশ্চয় জানেন দেশব্যাপী মানুষকে পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন করতে ‘ডেটল হারপিক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইন চলছে। এই ক্যাম্পেইন পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে কেমন ভূমিকা পালন করবে?

উত্তর: আমি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, গণমাধ্যম এবং ক্যাম্পেইনে দূত চিত্রনায়ক রিয়াজের কাছ থেকে এই ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জেনেছি। এটি নিঃসন্দেহে ভালো একটি উদ্যোগ। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি বড় বড় কাজ ও ক্যাম্পেইন হয়েছে। আমার বিশ্বাস এই ক্যাম্পেইন মানুষকে কিছুটা হলেও নাড়া দিতে পেরেছে। তবে, টেকসই করতে হলে এটিকে ধরে রাখতে হবে।

মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ‘ডেটল হারপিক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’কেমন ভূমিকা পালন করবে?

উত্তর: ছোট একটা জায়গা থেকে শুরু করছি মাঠ পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ। আমার বিশ্বাস এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা কিন্তু পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো জানি, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না। মানুষ যাতে পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো মেনে চলার অভ্যাস করতে পারে সেজন্য এই ক্যাম্পেইন ভালো একটি উদ্যোগ। একটি বিষয় বারবার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৯
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।