তাকে ঘিরে যখন সেলফি ঝড়, তখনও মুখে নেই বিরক্তির ছাপ। আছে কেবল চোখে ছল ছল অশ্রু।
এদিকে মাশরাফি অনুশীলনের জন্য মাঠে ফেরার পর মিডিয়ার মুখোমুখি হন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি বলেন, মাশরাফি পুরো দলটাকে পরিবর্তন করে দিয়েছে। মাশরাফি খেলার পরিবর্তন এনে দিয়েছেন। তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে তার পথচলা ছিল দারুণ।
তিনি বলেন, ‘মাশরাফির জায়গা পূরণ হবার নয়। ও তো এখনো এভেইলেভল আছে। তবে তার মতো একজন অধিনায়ক আগামী দিনে বাংলাদেশ দল পাবে কি না, সেটা দেখার বিষয়। তবে নতুন যারা আসবেন, তারা তাকে অনুকরণ করে চলবেন। কারণ মাশরাফি একটা উদাহরণ সেট করে গেছে। ’
এরপর বিকেলে যখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ উপলক্ষে দলবদল শুরু হয়, তখন সতীর্থরা মাশরাফির প্রতি শুভকামনা জানান। তার অধিনায়কত্ব বাংলাদেশ দল মিস করবে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের তারকা ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবাল বলেন, ‘এই জায়গায় উনার ব্যাপারে বলাটা কম হয়ে যাবে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য তিনি যা করেছেন, তাতে তিনি সবার মনের মধ্যে থাকবেন। ক্রিকেট বোর্ড, ক্রিকেটার, দর্শক সবার মনের মধ্যে থাকবেন। উনি আমাদের জন্য যা করেছেন, কেউ উনার মূল্য দিতে পারবে না। ’
জাতীয় দলের আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিক বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি ভাইয়ের স্থান কোনোদিন পূরণ হবার নয়। ভবিষ্যতে পূরণ হবে কিনা জানিনা। উনাকে অবশ্যই মিস করবো। অবশ্যই আমাদের জন্য তিনি কেবল অধিনায়ক নয়, বড় ভাই ছিলেন। শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও তিনি আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আশা করবো উনি যেন সুস্থ থাকেন।
ভারপ্রাপ্ত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেন, প্রতিটি দলেই ভালোমানের কিছু খেলোয়াড় থাকে। মাশরাফিই তাদের মধ্যে অন্যতম, এ ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নেই। ব্যক্তি ও অধিনায়ক মাশরাফির পার্থক্য টানতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তি হিসেবে তিনি অসাধারণ। আর অধিনায়ক হিসেবে আরো অসাধারণ। অধিনায়ক হিসেবে তার সাফল্য বাংলাদেশকে অনেক কিছু দিয়েছে।
ব্যাটসম্যান মো. মিথুন বলেন, ‘অধিনায়ক মাশরাফি আমাদের বড় ভাইয়ের মতো আগলে রাখতেন। তার সাফল্য আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে। ’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের একমাত্র নকআউট পর্বে খেলার ঘটনা। ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ।
মাশরাফির অধীনে এখন পর্যন্ত ৮৭টি ওয়ানডে খেলে ৪৯টিতে জয় আর ৩৬টিতে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। এমন রেকর্ড বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে আর কোনো অধিনায়কের নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দারুণ একটি মাইলফলক অপেক্ষা করছে মাশরাফির জন্য। এ ম্যাচ জিতলেই অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ওয়ানডে জয়ের কীর্তি গড়বেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘন্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এনইউ/এমএইচএম