ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিএনপিকে অপরাজনীতির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
বিএনপিকে অপরাজনীতির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে: তথ্যমন্ত্রী বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে, আবার জনগণের কাছে যেতে হলে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যে অপরাজনীতি করেছে, মানুষের ওপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, সেগুলোর জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন, সম্ভবত বিএনপির দম ফুরিয়ে গেছে, এজন্য হাঁটা শুরু করেছে।

তারা তো আগে মিছিল করতো, এখন মিছিলের পরিবর্তে হাঁটা শুরু করেছে। বিএনপি যে পদযাত্রা শুরু করেছে সম্ভবত তারা কারো কাছ থেকে নকল করছে।
আপনারা একটু চোখ হাঁটিয়ে দেখুন কারো কাছ থেকে নকল করছে কিনা? বিএনপি পদযাত্রা করুক আর যেই যাত্রায় করুক না কেন তাদের এই যাত্রায় জনগণতো দূরের কথা তাদের সাধারণ যে কর্মীরা তারাও পদযাত্রায় শামিল হয়নি।  

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।  

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।  

কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোইকা এই ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে। ৭০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত ফিজিবিলিটি স্টাডিতেই চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তা, ব্যবহার উপযোগিতা, মেট্রোরেলের রুটসহ নানা বিষয় উঠে আসবে। একই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কত অর্থের প্রয়োজন তারও হিসাব দেবে কাইকো।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এদেশে বিএনপি দাবি তুলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এই দেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউকে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ সব সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই নির্বাচন হবে। সংসদীয় গণতন্ত্রের সব দেশেই যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও তাই করবে।  

তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। তার সরকারই তখন নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বিএনপির এই পদযাত্রা, কিংবা কদিন পরে বসার যাত্রা করবে যেই যাত্রায় করুক না কেন, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না।  

আগের মতো বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তখন কোনো সমস্যায় পড়বে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যেকোনো দল বা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, মানুষের সমর্থনের ওপর বিশ্বাস করে তারা যদি নির্বাচন বর্জন করেন তাহলে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যায়, বিএনপি বিষয়টি সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারছে কিনা আমি জানি না। যদি তারা নির্বাচন বর্জন করে তারা মানুষ থেকে যে দূরে সরে গেছে, আরো যোজন যোজন দূরে সরে যাবে। তবে আমি আশা করি তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমরা চাই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আগামী দিনের সরকার পছন্দ করুক সেটিই আমরা চাই।

মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি শুভদিন, আনন্দের দিন। কারণ চট্টগ্রামে মেট্রোরেল হবে চট্টগ্রামের মানুষও অনেকে ভাবেনি, এটি আমার জন্যও আনন্দের দিন। বেশ কয়েকবছর ধরে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর কাছে বহুবার নিবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আজকে কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে বিশ্বমন্দা চলছে, সঙ্কটময় বিশ্ব পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতির মধ্যে অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে সরকার। বিশ্বময় অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম ধীরগতি হয়ে গেছে। সেই পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী এই চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।  

চট্টগ্রাম একটি নান্দনিক শহর উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য কী পরিমাণ গুরুত্ব দেন, সেটি একটি প্রজেক্টের কথা আলোচনা করলেই বুঝতে পারবেন। তিনটা প্রজেক্ট মিলিয়ে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার একটা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য দিয়েছেন। সেই কাজগুলো চলছে, তিনটা প্রজেক্টের কাজের সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই প্রজেক্টগুলো যদি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয় আমি আশাকরি আগামী বছর থেকে চট্টগ্রাম শহরে পানি উঠবে না।

তিনি বলেন, অনেক পাহাড় কাটা হয়েছে, পাহাড় কাটার কারণে নান্দনিকতা নষ্ট হয়েছে, পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরকে আরো নান্দনিক করার ক্ষেত্রে মেট্রোরেল প্রজেক্টটি অত্যন্ত সহায়ক হবে। এই শহরের লোকসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আগামী ১০ বছর পরে এই শহরের লোকসংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এই শহর ঘনবসতিপূর্ণ শহর। সুতরাং এখানে মেট্রোরেলের কোনো বিকল্প নেই।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ঝাং কিউন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ইআরডি সচিব শরিফা খান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, কোইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়াং-আহ দোহ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ 
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।