তবে এবার ধরা পড়েছেন তিনি। বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি সেলিম চৌধুরীর নামে অভিযোগ দেন।
এরপর বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিভাগীয় কমিশনার এক আদেশে সেলিম চৌধুরীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতাবন্ধসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি। ’
অভিযুক্ত সেলিম চৌধুরী রহমতগঞ্জ এলাকার আবদুর ছাত্তার রোডের জাহান ভিলার মৃত আবদুর রহিমের ছেলে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, সেলিম চৌধুরীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়ে তদন্তে নামে সমাজসেবা কার্যালয়। কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক এক আদেশে তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত সেলিম চৌধুরীকে গত ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে উপস্থিত থাকা অনুরোধ জানান।
একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ ও অভিযোগকারী সীতাকুন্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইমাম নগর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে মহিউদ্দিনকেও উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয় একই আদেশে।
এ নিদের্শনা পেয়ে অভিযুক্ত সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী গত ১০ ডিসেম্বর তিন মাসের সময় চেয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের কাছে আবেদন করেন।
তবে সমাজসেবা কার্যালয়েরে উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক সেই আবেদন না মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে তিনি সেলিম চৌধুরীর নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণের নিমিত্তে প্রদেয় দলিলাদি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে এ বিষয়ে যাচাই করেন। এতে মো. সেলিম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ ৫৭৯২৯ মূলে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীভাতা ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে বলে নিশ্চিত হন।
কিন্তু ৫৭৯২৯ সাময়িক সনদপত্র সেলিম চৌধুরীর নয়। এ নম্বারের সনদপত্রের অধিকারী চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চান্দার হাট সৈয়দ নগর গ্রামের মরহুম একরাম রসুলের ছেলে মো.আবদুল ওয়াজেদ।
সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক ১৯ ডিসেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান।
সেই প্রতিবেদনে সেলিম চৌধুরী মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সেলিম চৌধুরী’র অনুকূলে ভাতা না দেওয়ার জন্য বলেছেন।
এই প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই বিভাগীয় কমিশনার সেলিম চৌধুরীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতাবন্ধসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
টিএইচ/টিসি