ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারপ্রার্থীদের হয়ে কাজ করুন

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারপ্রার্থীদের হয়ে কাজ করুন পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ কিউ এ নাছির উদদী্নের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন ভূইয়া, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম মাসুদ পারভেজ, আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান, নাজমুল হোসেন চৌধুরী, শফি উদ্দিন এবং মো. আল-ইমরান খান।

নগর পুলিশ কর্তৃপক্ষের পক্ষে ডিসি ট্রাফিক (উত্তর) মো. সুজায়েত ইসলাম, ডিসি (উত্তর) মো. আব্দুল ওয়ারীশ, ডিসি (দক্ষিন) এস এম মোস্তাইন হোসেন, এডিসি ট্রাফিক (দক্ষিণ) শচীন চাকমা, এডিসি ট্রাফিক (বন্দর) মো. আকরামুল হোসেন, এডিসি প্রসিকিউশন নির্মেলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী, পিবিআই পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবির ও সিআইডির পরিদর্শক মো. শাহজাহান কামাল উপস্থিত ছিলেন।

অফিসার ইন-চার্জদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালীর থানার মো. জসিম উদ্দিন, চকবাজার থানার মীর মো. নুরুল হুদা, বায়েজীদ বোস্তামী থানার মো. আবুল কালাম, বাকলিয়া থানার প্রনব চৌধুরী, ইপিজেড থানার সৈয়দ মো. আহসানুল ইসলাম, পাহাড়তলী থানার মো. রফিকুল ইসলাম, সদরঘাট থানার মর্জিনা আকতার, বন্দর থানার এস. এম ময়নুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানার মো. আবুল বশর, হালিশহর থানার মো. মাহফুজুর রহমান, ডবলমুরিং থানার একেএম মহিউদ্দিন, কর্ণফুলী থানার সৈয়দুল মোস্তফা, খুলশী থানার শেখ মো. নাসির উদ্দিন, পতেঙ্গা থানার গাজী মু. ফৌজুল আজীম, পাঁচলাইশ থানার মো. ওয়ালী উদ্দিন ও আকবর শাহ্ থানার মোহাম্মদ আলমগীর।

এছাড়াও সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল করিম চৌধুরী, চমেক পরিচালকের প্রতিনিধি ডাক্তার রাজীব পলিত, চমেক ফরেনসিকের ডা. মো. হাবিবুর রহমান, উপ-পরিচালক (মাদক) শামীম আহমদ, সহকারী পরিচালক (দুদক) জাফর আহমেদ, প্রবেশন অফিসার মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন ও পারুমা বেগম, আদালতের জিআরও এবং বেঞ্চ সহকারীসহ আদালত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কনফারেন্সের শুরুতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ. কিউ. এম নাছির উদদীন বিগত সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে চট্টগ্রাম সিএমএম আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য বিচারক ও থানার অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তার বক্তব্যে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন মামলার আসামী আদালতের বাইরে থেকে একদিকে যেমন নতুন নতুন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে অন্যদিকে, বিচার ব্যবস্থা ও সরকারের অন্যান্য সংস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থার সংকট দেখা দিচ্ছে। তাই, বিভিন্ন পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার জন্য তিনি বিভিন্ন থানা থেকে আগত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করা, প্রতিবেদন দাখিল, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করা, তাদের নিরাপত্তা বিধান, গ্রেফতারের পর আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে কার্যকর ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।

কনফারেন্সে বক্তারা যথাসময়ে সাক্ষী উপস্থাপনের প্রশংসা করেন। পুলিশ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সাক্ষীর উপস্থিতি পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষতঃ পুরাতন মামলা অধিক হারে নিষ্পত্তি হওয়ার সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এছাড়াও বক্তারা দ্রুত গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল ও সমন জারীর ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্ত কার্যে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান, তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার, হয়রানী বন্ধ,  জখমী রিপোর্ট ও চার্জশীট প্রদানের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন, নকলখানা হতে স্বল্পতম সময়ে নকল সরবরাহের ব্যবস্থা করা, মামলার আলামত সংরক্ষণ ও সঠিক নিয়মে নিষ্পত্তি, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও নিষ্পত্তিকৃত নথি দ্রুত রেকর্ডরুমে প্রেরণ, আদালত ও বিচার সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহ নানাবিধ বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত কনফারেন্সে তুলে ধরেন।

বিভিন্ন থানা থেকে আগত থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য উপস্থিতি কর্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যার আইনী সমাধান, প্রশ্নোত্তর প্রদান এবং পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করার পর সমাপনী বক্তব্যে চিফ মেটোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট এ কিউ এ নাছির উদদী্ন বলেন, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচার প্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও অবহেলা কাম্য নয়।

তিনি নারীর অধিকার, কারাবন্দিদের অধিকার সর্বোপরি মানবাধিকার সমুন্নত রেখে বিচারপ্রার্থী জনগণের কাঙ্খিত ন্যায় বিচার দ্রুততম সময়ে নিশ্চিতকরণ ও আইনের শাসন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।