চট্টগ্রাম: সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজ এমভি কোটা রঞ্চক থেকে মালয়েশিয়া ভিত্তিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো বরাবরে গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পাইরেসি হয়েছে বলে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। এ বিষয়ে এমভি কোটা রঞ্চকের মাস্টার বা কোনো নাবিক চট্টগ্রাম বন্দরের পোর্ট কন্ট্রোল বা কোস্টগার্ডকে অবহিত করেনি।
অনুসন্ধানে সরেজমিনে জানা যায় যে, জাহাজের নাবিকদের যোগসাজশে স্থানীয় ভেন্ডরের কাছে জাহাজ থেকে কিছু রশি এবং তেল বিক্রি করা হয়।
আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বন্দর নিরাপত্তা কোডের (আইএসপিএস) ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম আলোচ্য বিষয়টি অনুসন্ধানের নিমিত্তে এমভি কোটা রঞ্চক জাহাজে যান। এই বিষয়ে উক্ত জাহাজের মাস্টার আইএমবিএতে দাখিল করা অভিযোগটি ভুল বলে স্বীকার করেন এবং বলেন যে, গত ২৮ জুন উক্ত জাহাজে কোনোরূপ পাইরেসি কিংবা অন্যকোনো ঘটনা সংঘটিত হয়নি। এছাড়াও তিনি আইএমবিএ বরাবরে প্রেরিত রিপোর্টটিও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) এসব তথ্য বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, বন্দর চেয়ারম্যানের সাহসী ভূমিকায় পাইরেসি অপবাদের হাত থেকে রক্ষা পেলো বাংলাদেশ।
২০১৯-২০২১ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় কোনো চুরি, ডাকাতি, জলদস্যুতা ঘটেনি। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ও উপকূলীয় অঞ্চল একটি নিরাপদ এলাকা হিসেবে বহির্বিশ্বে সুখ্যাতি রয়েছে। একটি দুষ্ট চক্র এ-ধরনের ভুয়া পাইরেসি রিপোর্ট দাখিল করে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সালে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক অপর বিশ্ব নৌ নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা রিক্যাপ কর্তৃক অনুসন্ধানেও ৬টি ভুয়া পাইরেসি রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে মর্মে প্রমাণিত হয়েছে। ২০০৪ সালের জুলাই থেকে আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঈর্ষণীয় উন্নতি হতে থাকে। ২০১৯ সাল থেকে রিক্যাপ চট্টগ্রাম বন্দরকে শূন্য পাইরেসি বন্দর হিসেবে ঘোষণা করে। আলোচ্য জাহাজ থেকে দাখিলকৃত ভুয়া রিপোর্ট উদঘাটনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দর নিরাপত্তা পরিকল্পনা হালনাগাদ করে এবং আন্তর্জাতিক বন্দর ও জাহাজ নিরাপত্তা কোড অনুযায়ী বন্দরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেন। বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়নে গৃহীত পদক্ষেপ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল যেমন ইউএস কোস্টগার্ড, রিক্যাপ ইত্যাদি থেকে প্রশংসিত হয়েছে। ইতিপূর্বে বন্দরের চেয়ারম্যান ১১৫৯ কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি হাইয়ান সিটিকে আংশিক ডুবন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ জাহাজ চলাচলের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশ সময়ঃ ১৭০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
এআর/টিসি