কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে ১৫ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরের শাসকদলের বর্তমান বিধায়ক।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জাকির হোসেনের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতর। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ১৫ কোটি রুপি।
আয়কর দফতর সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১১ জানুয়ারি) আয়কর বিভাগের কর্তারা হানা দিয়েছিলেন জাকিরের বাড়িতে। তার বিড়ি কারখানা, গোডাউন এবং অফিস তল্লাশি চালিয়ে ১৫ কোটি রুপি উদ্ধার হয়। উদ্ধার হওয়া রুপির মধ্যে একটি জায়গা থেকে মিলেছে ৯ কোটি রুপি এবং গোডাউনে ও অফিস হানা দিয়েও পাওয়া গিয়েছে ৬ কোটি রুপি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি সামনে আসে।
যদিও জাকিরের বক্তব্য, সাত হাজার শ্রমিক কাজ তার করেন। এছাড়া তার বিভিন্ন রকমের ব্যবসা রয়েছে। শ্রমিকদের বেতন নগদে দিতে হয়। সে কারণেই রাইস মিলে কিছু নগদ রুপি রাখা ছিল।
তিনি আরও জানিয়েছেন, তার বাড়ি থেকে যে নগদ রুপি উদ্ধার হয়েছে তার অনেকটাই নারী শ্রমিকদের জমানো অর্থ।
তবে গত বছর থেকে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হচ্ছে রাশি রাশি রুপি। যা দেখে চমকে যাচ্ছে রাজ্যবাসী। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো মুর্শিদাবাদ জেলা।
৬ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে এক অধ্যাপকের ফ্ল্যাট থেকে রাজ্য পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৩২ লাখ রুপি উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ রুপি কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক অমিতাভ দাসের বিরুদ্ধে। সেই বেআইনি অর্থর অংশ বিশেষ নিজের ফ্ল্যাটে অমিতাভ দাস রেখেছিলেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
এর আগে, রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কলকাতার টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে গত বছর জুলাই মাসে নগদ প্রায় ৫০ কোটি রুপি উদ্ধার করেছিল ইডি। মিলে ছিল প্রচুর স্বর্ণের গহনাসহ নানা দ্রব্য। এরপর গত সেপ্টেম্বরে কলকাতার গার্ডেনরিচে পরিবহণ ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি ও দফতরে হানা দিয়ে ১৭ কোটি রুপি উদ্ধার করেছিল ভারতের আর্থিক বিষয়ক তদন্তকারী সংস্থার (ইডি) কর্তারা। আমিরের বিরুদ্ধে মোবাইল অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। যদিও আমির মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিম ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে।
এরপর গত সেপ্টেম্বরে মাসে মালদহ জেলার গাজোলের ঘাকশোল এলাকার মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহার বাড়িতে অভিযান চালান সিআইডি। উদ্ধার হয় ১ কোটি ৩০ লাখ রুপি। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ফেনসিডিল পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। এছাড়া গত অগাস্ট মাসে হাওড়ার জেলার পাঁচলায় রাজ্য পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক। উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫০ লাখ রুপি। ঝাড়খন্ডের সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে ওই অর্থ তারা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
এছাড়া গত বছরই অক্টোবরে হাওড়া জেলার শিবপুরে ব্যবসায়ী শৈলেশ পাণ্ডের ভাইয়ের গাড়ি ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গাড়ি থেকে ২ কোটি ও তার ফ্ল্যাটের বক্সখাট থেকে ৬ কোটি রুপি উদ্ধর করে পুলিশ। একাধিক লোককে ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে শৈলেশদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) কলকাতার খিদিরপুর থেকে ৩০ লাখ রুপি উদ্ধার করে ভারতের অপর এক তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। গত বছর থেকে শুরু হয়ে নতুন বছরেও বিপুল রুপির হদিস মিলছে পশ্চিমবঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা,জানুয়ারি ১২, ২০২৩
ভিএস/এএটি