ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

লক্ষ্মীপূজার আয়োজনে নাজেহাল বঙ্গবাসী, মাথায় হাত বিক্রেতাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
লক্ষ্মীপূজার আয়োজনে নাজেহাল বঙ্গবাসী, মাথায় হাত বিক্রেতাদের

কলকাতা: রাত বাড়লেই সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আচার লক্ষ্মীপূজা। তিথি অনুযায়ী, এবারে পূজা হবে দুদিন।

অর্থাৎ বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিন পূজা করা যাবে।

আশ্বিন মাসের শেষে এ পূজাকে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা বলা হয়ে থাকে। পরিবারের সচ্ছলতা ও শ্রী-বৃদ্ধির জন্যই লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর জাঁকজমকপূর্ণ লক্ষ্মীপূজার আহ্বান করতে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে মধ্যবিত্তদের।

ফলমূল মিষ্টির পাশাপাশি প্রায় সব ঘর-বাড়িতেই নানা পদের ভোগ সাজিয়ে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করা হয়। এ বছর প্রতিটি পণ্যের আকাশমূল্য হওয়ায় মধ্যবিত্ত বাঙালির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ভারতে আর্থিক মন্দা ও অপ্রত্যাশিত বন্যার কারণে প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্য ও সবজির দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এর মধ্যে দুর্গাপূজার আয়োজন ও দেবি বিসর্জনে অনেক অর্থ খরচ হয়েছে সনাতনদের। দুদিন না যেতেই লক্ষ্মীপূজা। কয়েকদিন পর আসছে কালীপূজা। সব মিলিয়ে জনসাধারণের ভোগান্তির শেষ নেই। বাজারে ফলের পাশাপাশি দাম বেড়েছে প্রতিটি সবজির। অনেকেই পূজায় লক্ষ্মীকে প্রসাদী ভোগ হিসেবে ইলিশ মাছ দিয়ে থাকে। যাকে বলা হয় মাছভোগ। সেই মাছের দামও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে পূজার আগে ভিড় বেড়েছে ফল ও সবজির বাজারে। কিন্তু যতটা ভিড়, ততটা বেচাকেনা নেই বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। তাদের দাবি, আগে ক্রেতারা সবজি বা ফল এক কেজি করে কিনতেন। এ বছর সেই মান নেমে গেছে আধা কেজি বা তারও কমে। ফলে লোকসান হচ্ছে বিক্রেতাদের।

লক্ষ্মীপূজার মূল উপাদান নারিকেল নাড়ু। কলকাতার বাজারে মাঝারি সাইজের একটি নারিকেলের দাম ৫০ রুপি। গত বছর যা ২৫ রুপি ছিল। একটা ডাবের দাম পড়ছে ৬০ থেকে ৭০ রুপি। অনেকেই ডাবের বিকল্পের খোঁজ করছেন। এক কেজি আপেলের দাম ২২০; নাসপাতি ৩০০; শসা ৮০; পেয়ারা ১০০; পানিফল বিক্রি হচ্ছে ১০০ রুপিতে। এক কেজি বেদানার দাম ৩০০ রুপি; আঙুর ২৫০; পাকা পেঁপে ৮০; আতার দাম ৩০০; এক কেজি তরমুজের দাম প্রায় ১০০; কলার ডজন ৮০ রুপি।

ফলের পাশাপাশি সবজির দামও আগুন। বেশিরভাগ বাসায় লক্ষ্মীপূজায় খিচুড়িভোগ পরিবেশন করা হয়। এ বছর মানুষকে প্রসাদ বিতরণ করতে ভোগান্তি পোহাতে বলে মনে করছেন অনেকেই। বর্ষার পর থেকে সবজির বাজার দর চড়া। দুর্গাপূজা থেকে আরও বেড়েছে।

কলকাতার বাজারে এক কেজি পটলের দাম ৬০; করলা ১০০; সিম ১০০; বিট ৭০; গাজর ১০০; মরিচ ১৫০; মটরশুঁটি ৩০০ রুপি বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি বেগুনের দাম ১৬০; টমেটো ১২০; কুমড়া ৬০; বরবটি ১০০; বাঁধাকপি ৬০; ফুলকপি ৫০; এক কেজি আলু ৩৪ থেকে ৩৮; আদা কেজি প্রতি ৩০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। লক্ষ্মীপূজায় পেঁয়াজ ও রসুনের ব্যবহার হয় না।

বাজারে এক কেজি দেশি ইলিশের দাম ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ রুপি। এই মুহূর্তে বাজারে বাংলাদেশের ইলিশ নেই প্রায়। যা আছে ২২০০ থেকে ২৫০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, পরিবারের শ্রী-বৃদ্ধি করতে গিয়ে চলতি বছর যে পরিমাণে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ফলে এবারে অনেকেই ছোট আকারে পূজা দিচ্ছেন। আবার অনেকেই কোনো রকমে এবারে পূজা সারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
ভিএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।