ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভোট দিলেন না রাষ্ট্রপতি

... | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৪
ভোট দিলেন না রাষ্ট্রপতি

শুভ্রাদির রান্না ইউনিক। খেয়েই বলছি, না খেয়ে নয়।

ইন্দিরা গান্ধীও খেতে খুব পছন্দ করতেন। টিফিন ক্যারিয়ারে পাঠান হত। নিখাদ নিরামিষ বাঙালি ক্যুইজিন। সত্যিই লা জবাব। বর্তমানে তিনি ফার্স্ট লেডি। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্ত্রী। এখনও রাঁধেন কিনা জানি না। রোজ না হলেও মাঝেমধ্যে নিশ্চয়ই দু’একটা আইটেম রেঁধে খাওয়ান কর্তাকে। রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে শুনতে মধ্যাহ্ন ভোজ সারতেন প্রণব বাবু। এখনও সেই অভ্যাসটা আছে। ১৯৮০-তে তিনি যখন ইন্দিরা মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী তখনই দিল্লিতে তার বাড়িতে যাওয়া এবং খাওয়া।

শান্তিনিকেতনের পাশেই কীর্ণাহারে রাষ্ট্রপতির ভিটে। কলকাতার বাড়ি চাকদিয়ায়। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুর। এবার সেখানে প্রার্থী পুত্র অভিজিৎ। পিতা হিসেবে সেখানেই সে পড়ে থাকার কথা। আশা-নিরাশার ছলছলাৎ ঢেউ, নিশ্চয়ই তাঁর মনকে ধাক্কা দিচ্ছে পেছনে একবারে ছুটে যেতে। উপায় নেই। প্রোটোকলে আটকাবে। তাঁর ভোট চাকুদিয়াতেই। দিল্লি থেকে সস্ত্রীক উড়ে এসে ভোট দিয়ে যেতে পারতেন। দিলেন না। এড়িয়ে গেলেন। হয়তো নিরপেক্ষ থাকার দায়।

চাকুরিয়া এলাকাটা যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে। চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি। বিজেপির জোর খুবই কম। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তিন দলে। তৃণমূল প্রার্থী সুগত বসু আদতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নাতি। নেতাজীর ভ্রাতৃষ্পুত্র শিশির বসুর পুত্রও। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস পড়ান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট করেছেন। লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ায় বিতর্ক প্রেসিডেন্সিতে। গনভোট সুগতর বিপক্ষে গেছে। শিক্ষার্থীরা ভোটের রায়ে জানিয়েছেন, সংসদীয় আসনে প্রার্থী হয়ে তিনি গেস্ট থাকতে পারেন না। এই পদ ছাড়তে হবে। সুগত সে কথায় কান দেননি। সংসদ হলে, কেস্টর পদ ছেড়ে দেবেন, এমন কথাও বলেননি। সুগতর মা কৃষ্ণা বসু যাদবপুর কেন্দ্র থেকে আগে ভোটে জিতে সংসদ হয়েছেন। মা জিতেছেন বলে ছেলেও জিতবে এমন কোনও কথা নেই। সুগত যেভাবে বিতর্কে জড়িয়েছেন তার থেকে মুক্তি পাওয়াও কঠিন।

গতবার মমতার অনুরোধে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন কবীর সুমন। জিতেও গানের ভুবন ছেড়ে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর হয়নি। সুগম লড়েছিলেন একা। তৃণমূলের কর্মীদের সাহায্য তেমন পাননি। তাঁর জনপ্রিয়তাই তাঁকে জিতিয়েছে। সুগত, সুমনের কাছে কিচ্ছু না।
কংগ্রেস প্রার্থী সমীর আইচ তৃণমূলে ছিলেন। মমতার আন্দোলনের সঙ্গী হয়েছেন। মমতার আচরণে বিরক্ত, বিক্ষুব্ধ হয়ে এখন কংগ্রেসে। পেইন্টার হিসেবে তাঁর পরিচিতি আছে, তৃণমূলের ভোট কাটবেন ভালমতই। সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী ২০০৪-এ এই কেন্দ্রে জিতেছিলেন। ভোটকাটাকাটিতে এবার তার জয়ের আশা।

প্রণব মুর্খার্জি এসবের মধ্যে নেই। যখন কংগ্রেস রাজনীতি করেছেন সেই তখনকার তিনি আর এখনকার তিনি এক নন। তাঁর অবস্থা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। তিনি নিরপেক্ষ। তিনি ভারতের প্রথম নাগরিক। চাকুরিয়ায় না এসেও রাষ্ট্রপতি ভবনে বসে পোস্টাল ব্যালটেই ভোট দিতে পারতেন। সেটা পাঠানো হয়েছিল তাঁর কাছে, তিনি ফেরত পাঠিয়েছেন।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।