ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ক্রিমিনাল ও ধনীতে ভরপুর এবারের লোকসভা

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৪
ক্রিমিনাল ও ধনীতে ভরপুর এবারের লোকসভা তেলেগু দেশম পার্টির জয়দেব গাল্লা

ঢাকা: ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে বেশ কিছু রেকর্ড গড়েই দিল্লি দখল নিশ্চিত করেছে। দলের নেতা নরেন্দ্রভাই দমোদরদাস মোদী-ঝড়ে ধুলিসাৎ হয়েছে অনেক জাতীয় দল থেকে শুরু করে আঞ্চলিক শক্তি।

অবস্থা এমন যে, এখন সংসদে বিরোধী দল গঠনের জন্যও জোট গঠন করা হতে পারে। যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে সেটি হবে ভারতের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়।

‘দাঙ্গাখ্যাত’ গুজরাটের এই মুখ্যমন্ত্রীকেই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী-প্রাথী হিসাবে মনোনীত করে হিন্দুত্ববাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ-আরএসএস এর রাজনৈতিক শাখা হিসাবে পরিচিতি বিজেপি। মোদীই ভারতের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন, যার জন্ম স্বাধীনতার পর।

এতোসব রেকর্ডের মধ্যে আরো কিছু রেকর্ডও বেরিয়ে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের লোকসভাতেই সবচেয়ে বেশি অপরাধীর (ক্রিমিনাল) স্থান হবে, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এছাড়াও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভোটারের গণতান্ত্রিক এদেশটিতে এবারই সর্বাধিক ধনকুবের সংসদ সদস্যের স্থান হবে।

লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীরা ভারতের নির্বাচন কমিশনে (ইসিআই) তাদের যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন তা থেকে প্রাপ্ত তথ্যেই এসব আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্ম’স (এডিআর) এর বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু রোববার বিকালে তাদের অনলাইন সংস্করণে এ নিয়ে এক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ষোড়শ লোকসভায় প্রায় ৩৪ শতাংশ সংসদ সদস্য বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। ২০০৯ সালের পঞ্চদশ লোকসভায় সংখ্যাটি ছিল ৩০ ভাগ আর ২০০৪ সালের চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে লোকসভায় অপরাধীর সংখ্যা ছিল ২৪ শতাংশ। যাকে উত্তরোত্তর বৃদ্ধির সূচক হিসাবে মানছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এবারের নির্বাচনে বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) চার জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এরা সকলেই ক্রিমিনাল হিসাবে মামলার আসামি। মহারাষ্ট্রের হিন্দু মৌলবাদী দল শিবসেনার ১৫ সংসদ সদস্যের ৮ জনের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা আছে। বিজেপিরও অন্তত পাঁচ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘ভয়ানক’ অপরাধের অভিযোগ আছে। নির্বাচনে গোহারা-হারা দল কংগ্রেসীদের নামে এমনতরো অভিযোগ  কম হলেও এরাও এর বাইরে নয়।

অপরদিকে এবারের লোকসভায় ৮২ ভাগ সদস্যই কোটি রুপির মালিক। ২০০৯ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৫৮ ভাগ আর ২০০৪ সালের লোকসভায় মাত্র ৩০ ভাগ কোটিপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

যে যতো টাকার মালিকই হোন সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন আঞ্চলিক দল তেলেগু দেশম পার্টি-টিডিপির এক সংসদ সদস্য। বেশি টাকার মালিক হিসাবে লোকসভার সদস্য হয়েছেন তেলেগু দেশম পার্টির টিকিটে জেতা জয়দেব গাল্লা। তিনি সব মিলিয়ে ৬৮৩ কোটি রুপির মালিক।

এছাড়াও অন্ধ্র প্রদেশের তিনটি আঞ্চলিক দল- টিডিপি, টিআরএস, ওয়াইএসআরসিপি সবচেয়ে বেশি কোটিপতিকে নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এসব দলের সংসদ সদস্যরা গড়পড়তা ৫০ কোটি রুপির মালিক।

তবে দল হিসাবে সবচেয়ে গরিব সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআই-এম) থেকে। আর ব্যক্তিগতভাবে এবারের লোকসভায় সবচেয়ে গরিব সংসদ সদস্য পশ্চিবঙ্গের উমা সরেণ, তিনি মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।