ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মমতার বিপদে মোদী

অমিত বসু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৪
মমতার বিপদে মোদী

কোটি কোটি টাকা উড়িয়েও জয় ধরতে পারলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রীম কোর্টের মামলায় চূড়ান্ত পরাজয় হল।

দেশের সেরা আইনজীবীদের দাঁড়ি করিয়েছিলেন আত্মমর্যাদার স্বার্থে। তাঁরাও মমতাকে বাঁচাতে জান কবুল করেছেন। আদালতকে বুঝিয়েছেন, সারদা চিট ফান্ড মামলার তদন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার যথার্থভাবেই করছে। দিল্লি থেকে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা সিবিআইকে পাঠানোর দরকার নেই। তাঁদের কথায় সত্যতা খুঁজে পায়নি ডিভিশন বেঞ্চ। আসাম, ত্রিপুরা, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ডে যখন সিবিআর তদন্ত হচ্ছে তখন পশ্চিমবঙ্গে হলে ক্ষতি কী?

রায় শোনার পর মুখ পুড়ল মমতার। টেনশন কাটাতে চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে জিভও পুড়ল। বাধ্য হয়ে কাপের চা প্লেটে ঢেলে চুমুক দিতে লাগলেন। পরিষদরা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার সাহস খুঁজে পেলেন না। মমতা বুঝলেন, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়। পশ্চিমবঙ্গে ভোট মিটে গেলে সিবিআই এলে সুবিধে হত। অন্তত ভোটে প্রভাব পড়ত না। সিবিআই যে মমতার কাছে বাঘের চেয়ে ভয়ঙ্কর সেটা তৃণমূলের লোকেরাও জানে। তারাও সিঁটিয়েছে।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আগেই ঘোষণা করেছেন, মমতা আজ আর সততার প্রতীক নন, তিনি সারদার প্রতীক। সিবিআই তদন্তে তাঁর কথার সত্যতা যদি প্রকাশিত হয়, তাহলে মমতার সরকার বাঁচবে কি-না সন্দেহ। মমতা এখন কী করবেন, কার কাছে যাবেন, কে তাঁকে বাঁচানোর গ্যারান্টি দেবে। নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ভয় কী আমি আছি। মমতার জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, নির্বাচনী প্রচারে মমতাকে তীব্রভাবে আক্রমণ করার পর এখন তাঁর পাশে দাঁড়াতে চাইছেন। মোদীর জবাব, সে সবই ছিল মমতাকে কাছে টানার কৌশল। মমতাও তো মোদীকে কম আক্রমণ করেননি। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে নির্বাচনী নাটক ভালই জমেছিল। এই গেটআপ গেমে কার কতটা লাভ হল নির্বাচনী ফলে জানা যাবে।

তৃণমূল মরিয়া হয়ে ভোটে রিগিং করেছে। তাদের এমএলএ, জেলা সভাপতিরা বুথে গিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে বশ করে ইভিএমে পটাপট বোতাম টিপেছে। নির্বাচন কমিশন টেরও পায়নি। বুথে যে ভিডিও ক্যামেরা বসানোর কথা ছিল, বসানো হয়নি। বিরোধীদের প্রতিবাদও তেমনভাবে গ্রাহ্য করেনি কমিশন। তাদের দায়িত্ব ছিল সব বুথে কবরস্থানের শান্তি বজায় রাখা। সেটা থাকায় তারা নিশ্চিন্ত। তবু তৃণমূল আতঙ্কিত, বিজেপি নয়, তাদের সাজান ঘর ভেঙে দেয়। বিজেপির ভোট এবার যথেষ্ট বেড়েছে। তৃণমূলের ভোট ব্যাংকে থাবা বসিয়েই তারা বাড়তি ভোট সংগ্রহ করেছে।

তৃণমূলের আসন যদি কমে, বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষিতে মারা খাবে। মাথা নিচু করে বিজেপি জোটে মমতাকে ঢুকতে হবে। মায়াবতী, জয়ললিতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিজেপি। কংগ্রেস সম্মানজনক আসন পেলে বিজেপির ওপর চাপ বাড়বে। যে কোনও দলের প্রধান সম্পদ সংসদীয় আসন। সেটা যে একার ক্ষমতায় সম্ভব নয়, তিনি বুঝেছেন হাড়ে হাড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।