ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মোদীর ওপর অর্থনীতির ১০ চাপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৪
মোদীর ওপর অর্থনীতির ১০ চাপ

ঢাকা: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল জানা গেল শুক্রবার। ফলাফল অনুযায়ী, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ নেতা নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।



এদিকে, মা হীরাবিনের আশীর্বাদ নিতে পশ্চিম ভারতীয় রাজ্য গুজরাটের গান্ধীনগরে যান মোদী।

মোদী এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর কী কী অর্থনৈতিক সংস্কার করবেন, তার একটি হোমওয়ার্ক করে রেখেছেন। পরিকল্পনা করেছেন, কীভাবে অর্থনীতিতে সংস্কার সাধন করবেন।

দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ১০টি অর্থনৈতিক চাপ সহ্য করতে হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইম।

এ জন্য বিজনেস টাইম একটি তালিকা তৈরি করে তা বিশ্লেষণ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ১০টি চাপ মোদীকে হজম করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো,  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় হস্তক্ষেপ, ইন্স্যুরেন্স খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, প্রাইভেটাইজেশনের গতি ত্বরান্বিত করা, পণ্য ও সার্ভিস ট্যাক্স সংস্কার, রাষ্ট্রীয়খাতে ভর্তুকি কমানো, বিদ্যুৎ খাতে বৈচিত্র্য আনা, গ্যাসের মূল্য হ্রাস, জনশক্তি উন্নয়নবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রতিরক্ষা খাতে নিজস্ব উদ্ভাবনে গুরুত্বারোপ করা।

ব্যাংক ঋণ:
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইম এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, ভারতকে ব্যাংক ঋণের ১০ ভাগ আদায়ে হিমশিম খেতে হয়। এটা ভারতের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের একটা হুমকি। মোদীকে অর্থনীতির এ দিকটায় নজর দিতে হবে। তা না হলে এক সময় তা মোদীর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক:
ভারতের গভর্নর অর্থনীতির নীতিমালা একাই পরিচালনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করতে হবে মোদীকে। শুধু তাই-ই নয়, ভারতীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সংস্কার করতে হবে। এ জন্য এ বছরই একটি কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটিই সুদের হার নির্ধারণে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে।

ইন্স্যুরেন্স:
ভারতীয় অর্থনীতির একটি বড় খাত হচ্ছে ইন্স্যুরেন্স। এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ, এ খাত ভারতীয় অর্থনীতিকে সচল রাখতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। এখাতে বিনিয়োগ মাত্র ২৬ ভাগ।

প্রাইভেটাইজেশন:
মোদী প্রাইভেটাইজেশন খাতে করণীয় দিকগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে চিন্তাভাবনা করে রেখেছেন। রাজস্ব আদায় বাড়াতে ও রাষ্ট্রীয়খাতে ভর্তুকি কমাতে রাষ্ট্রীয় অনেক সম্পদকে ব্যক্তিখাতে ছেড়ে দিতে হবে। মোদীর বিজয়ে এখাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরো বেশি আস্থাশীল হবে।

কারণ, তারা ভারতে বিনিয়োগ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যক্তিখাতে ছেড়ে দিলে রাষ্ট্রের অনেক রাজস্ব আয় হবে। এ ছাড়া সে দেশের সাধারণ মানুষের মনোভাবও প্রাইভেটাইজেশনের পক্ষে।

পণ্য ও সার্ভিস ট্যাক্স:
ভারতে  পণ্য ও সার্ভিস ট্যাক্সের ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে অসামঞ্জস্য রয়েছে। এই অসামঞ্জস্য দূর করতে রাজ্য ও কেন্দ্রের জন্য একটা অভিন্ন নীতিমালা করতে হবে মোদীর সরকারকে।

ভর্তুকি:
ভারতে নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি অনেক দিতে হয়। এ জন্য ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য সরকারকে অভ্যন্তরীণ আয়ের ২ ভাগ ব্যয় করতে হয়েছে। বিজেপিকে এ জন্য একটি একটি সুশৃঙ্খল অবস্থান নিতে হবে।

বিদ্যুৎ:
বিদ্যুৎখাত উন্নয়নের জন্য নরেন্দ্র মোদীর একটি ভালো অবকাশ রয়েছে। এ জন্য তিনি গুজরাটি মডেলকে অনুসরণ করতে পারেন। গুজরাটে গ্রাহকের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ফিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। মোদী এই সুযোগটি জাতীয়ভাবেও কাজে লাগাতে পারেন।

গ্যাসের মূল্য:
এবছর স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গ্যাস দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু ভারতের জাতীয় নির্বাচনের জন্য এর মূল্য পুনর্নিধারণ করা হয়নি। নির্বাচনের পর গ্যাসের মূল্য বাড়াতে হবে মোদীর সরকারকে।

জনশক্তি:
জনশক্তি খাতে মোদীকে সংস্কার সাধন করতে হবে। উৎপাদনশীল ও কর্মসংস্থানমুখী হিসেবে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে।

প্রতিরক্ষা খাত:
ভারত পৃথিবীর সবচাইতে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। মোদী ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিরক্ষা খাতে আরো বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ফেলা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।