ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

গেরুয়া উৎসবে অন্য মোদী

... | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪
গেরুয়া উৎসবে অন্য মোদী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নয়াদিল্লী থেকে: সেই মেজাজ নেই। চড়া গলাও নেই।

নেই শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার অস্ত্র! পাঞ্জাবির ওপরে হালকা নীল রঙের কোট পড়া মোদীকে শনিবার বেশ ঠাণ্ডা আর বিনয়ী মেজাজে দেখা যায়। জয়ের আনন্দের চেয়ে তার কণ্ঠে পাওয়া যায় কৃতজ্ঞতা আর তৃপ্তির সুর।

শনিবার ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে টানা ১২৮ বছরে পুরানো দল কংগ্রেসকে বিপুল আসনে হারিয়ে প্রথমবারের মত দিল্লী আসেন মোদী।

এ উপলক্ষে সকাল থেকেই দিল্লী পরিণত হয় গেরুয়ার উৎসবের নগরীতে। বিজেপির দলীয় পতাকার গেরুয়া রঙে সাজার পাশাপাশি নেতাকর্মীরা সাজিয়েছে দিল্লিকে। বিমানবন্দর থেকে বিরাট এক রোড শো করে অশোক রোডে বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অন্য এক মোদী!

শান্ত ভঙ্গিতে স্মিত হেসে দেশবাসীকে প্রণাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। ধন্যবাদ জানান দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে। বলেন, ভারতীয় লোকতন্ত্রের এ বিশাল জয়ের জন্য সবাই যেভাবে এগিয়ে এসেছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি ভারতবাসীর সব প্রত্যাশা সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করবো।  
এটুকু বলেই বক্তব্য শেষ করেন মোদী। দূর থেকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুঁড়তে শুরু করলে মাইক্রোফোন তুলে নেন বিজপির বর্তমান সভাপতি অধ্যক্ষ রাজনাথ সিং।

তিনি বলেন, এর বেশি তিনি (নরেন্দ্র মোদী) আজ কিছুই বলবেন না। শপথ নেওয়ার পরেই আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

এরপরেই তিনি অশোক রোডের বিজেপি কার‌্যালয় ত্যাগ করে হেলিকপ্টারে রওনা দেন বারানসির উদ্দেশ্যে। যেখানে থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন মোদী। সেখানে কাশি বিশ্বনাথের মন্দির দর্শন করে গঙ্গা ঘাটে আরতি দেন মোদী।  
 
এর আগে সকাল ১০টায় বীরের বেশে গুজরাট থেকে নরেন্দ্র মোদী আসেন দিল্লী বিমানবন্দরে।

এদিকে হবু প্রধানমন্ত্রী মোদী দিল্লির অশোক রোডে বিজেপি কার্যালয়ে পৌঁছে উপস্থিত নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা এলকে আদভানিকে। এসময় তাকে বুকে জড়িয়ে নেন আদভানি। মিষ্টি মুখও করানো হয় একে অপরকে। মোদীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান বিজেপি নেতা সুষমা স্বরাজসহ অন্যান্য নেতারা।

এরপর বিজেপি কার্যালয় সংলগ্ন অরুন জেটলির একতলা বাড়িতে বিজেপির সংসদীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। প্রায় দুই ঘণ্টা পর হঠাৎ মিডিয়ার ডাক আসে।

বিরাট প্যান্ডেলের মধ্যে গেরুয়া রঙের মঞ্চ। চেয়ারের কাভারগুলোতেও একই রঙ। সবার অপেক্ষার অবসান করে মঞ্চে আসেন নরেন্দ্র দামোদর মোদী। সঙ্গে বিজেপির জেষ্ঠ্য নেতা এল কে আদভানি ও সুষুমা স্বরাজ।

আরো ছিলেন, বিজেপির সভাপতি অধ্যক্ষ রাজনাথ সিং, অরুন জেটলি, নিতিন গাড়কড়ি, রবি শংকর প্রসাদ, মুরুলি মনোহর যোশী অন্যান্য শীর্ষ নেতারা।
এখানেও প্রবীন বিজেপি নেতা আদভানী সংবর্ধনা দেন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মোদীকে।

বিজেপির বর্তমান সভাপতি রাজনাথ সিং দলীয় সমর্থক এবং দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম বিরাট ব্যবধানে কোনো নন কংগ্রেস পার্টি ক্ষমতায় এসেছে। যার কৃতিত্বের অধিকারী একমাত্র এ দেশের জনগণ। প্রত্যেকেই ভারত নির্মাণে স্বতন্ত্র স্বাধীন পরিকল্পনার অংশিদার।

বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপির সাংবিধানিক কমিটিতে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি পাস হয়েছে। আগামী ২০ তারিখ আবারও এ কমিটি বৈঠক করবে। সেখানে কেবিনেট গঠন বিষয়ে আলাপ হবে।

সরকার গঠনে এনডিএ জোটের সব সদস্যকে রাখা হবে জানিয়ে বিজেপির সভাপতি বলেন, নতুন সরকার কবে শপথ নেবে বিষয়টি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। ২০ তারিখের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।