ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অধিকাংশ লোকসভা সদস্য ৪০ ভাগ ভোট পেয়েছেন

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৪
অধিকাংশ লোকসভা সদস্য ৪০ ভাগ ভোট পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী

ঢাকা: ভারতের ষোড়শ লোকসভায় এবার যারা সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন। চারশ বেশি সংসদ সদস্য শতকরা ৪০ থেকে ৭০ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান বিগত পঞ্চদশ লোকসভায় নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গড় ভোটের তুলনায় বেশি; সেবার অধিকাংশ সংসদ সদস্যই গড়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

নির্বাচন পরবর্তী ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এবার ভারতে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন সুরাট কেন্দ্রে থেকে নির্বাচিত বিজেপি নেত্রী দর্শনা ভিক্রম জারদোশ, তিনি পেয়েছেন শতকরা ৭৫ দশমিক ৮ ভাগ ভোট। আর সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে লুধিয়ানার সংসদ সদস্য রাভনিত সিং বিটটু। তিনি ২৭ দশমিক ৩ শতাং ভোট পেয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

অপরদিকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক দল-আরএসএস এর রাজনৈতিক শাখা হিসাবে পরিচিত ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপির সংসদ দলীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেদ্রভাই দমোদরদাস মোদী এবার দুটি আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি দুটি আসনেই জয় পেয়েছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদী তার ‘খাসতালুক’ রাজ্যের বাদোদারা আসন থেকে পেয়েছেন ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। আর উত্তর প্রদেশের বারানসী আসনে তিনি ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। বারানসী আসনটি আগে ছিল বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. মুরলী মোহন যোশীর। এবার এই আসনে মোদীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান ভারতের রাজনীতির ‘চমক’ আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিয়াল। উত্তর প্রদেশের গজিয়াবাদেই আম আদমি পার্টির সদর দপ্তর এবং কেজরিয়াল এখানকারই ভূমিপুত্র।

এছাড়া কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী তার উত্তর প্রদেশের রায়বেরিলি আসনে জিতেছেন ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে। আর তার ছেলে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী পারিবারিক আসন উত্তর প্রদেশের আমেথি থেকে ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন। কংগ্রেসের এই নেতাকে এবার পাশ করার জন্য বেশ বেগ পেতে হেয়েছে। বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার পিছিয়ে তিনি কষ্টার্জিত জয় পেয়েছেন।

তবে এটা ঠিক, ভারতের সবচেয়ে বেশি আসনের রাজ্য উত্তর প্রদেশের প্রায় সবকটি আসনেই ৪ থেকে ৫ জন করে শক্তিশালী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ফলে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, উত্তর প্রদেশে ষোড়শ লোকসভায় নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গড় ভোট ৩০ থেকে ৪০ ভাগ। তবে বিজয়ীদের গড় এই ভোটের হার ২০০৯ সালের নির্বাচনের চেয়ে অন্তত ১০ ভাগ বেশি। সেবার সংসদ সদস্যরা গড়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির প্রধান্য নিরঙ্কুশ থাকায় ‘দাঙ্গাখ্যাত’ গুজরাটের অধিকাংশ প্রার্থীই ৫০ ভাগের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্তত তিনজন ৭০ ভাগের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

হিন্দু মৌলবাদী দল শিবসেনার প্রাধান্য থাকা মহারাষ্ট্রের অবস্থাটাও মোটামুটি গুজরাটের কাছাকাছি। সেখানকার অন্তত ২৮ জন প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, এর মধ্যে তিন জন ৬০ শতাংশের গন্ডি পেরিয়েছেন। আর ১৬ জন ৪০ শতাংশ বা তার কিছু বেশি ভোট পেয়ে লোকসভায় বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

বিহারে ১৯ জন সংসদ সদস্য পেয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ভোট। অন্ধ্রের সংসদদের গড় ভোট ২০ থেকে ৫০ শতাংশ আর তামিলনাডুতে ৩০ থেকে ৬০ ভাগ।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্ম (এডিআর) এর প্রতিষ্ঠাতা ত্রিলোচন শ্রেষ্ঠী ফলাফল বিশ্লেষণ করে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্যের জন্য আইডল ও নিরাপদ হচ্ছে ওই আসনের অর্ধেকের বেশি ভোট পাওয়া। এটা প্রার্থীর প্রতি মানুষের প্রকৃত জনসমর্থনের দৃষ্টান্তকে তুলে ধরে।

“কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, ভারতের লোকসভার মাত্র ২০০ জনের মতো সংসদ সদস্য সেই ভোট পেতে সমর্থ হয়েছেন। তবে এটা ঠিক, ২০০৯ সালের নির্বাচনের চেয়ে এবারের সংসদ সদস্যরা বেশি ভোট পেয়েছেন, এটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি”, যোগ করেন ত্রিলোচন শ্রেষ্ঠী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।