ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

চা বিক্রেতা থেকে সাধু, অতঃপর প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৯ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪
চা বিক্রেতা থেকে সাধু, অতঃপর প্রধানমন্ত্রী ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রেলওয়ে স্টেশনে একজন বালক যখন চা বিক্রির কাজে বাব‍াকে সহযোগিতা করছিলেন অথবা ধর্মের প্রতি অনুগত হয়ে হিমালয়ের পাদদেশে এক তরুণ যখন সাধু জীবন যাপন করছিলেন তখনও কি কেউ ভেবেছিল- এই কিশোর বা তরুণই একদিন বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রটির নেতৃত্ব দেবেন? হয়তো ভেবেছিল, নতুবা না! কিন্তু রেলওয়ে স্টেশনের ওই কিশোর কিংবা হিমালয়ের ওই তরুণ এখন সত্যিই বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতৃত্বে এসে গেছেন।


নরেন্দ্র দোমোদরদাস মোদীরই কথা বলা হচ্ছে।

১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যের উজ্জৈন জেলার বড় নগরে জন্মগ্রহণ তার। বাবার নাম দামোদারদাস মূলচাঁদ মোদী ও মা হীরাবেন মোদী।

কৈশোরে পড়াশোনার ‍পাশাপাশি বড়নগর রেলস্টেশনে বাবাকে চা বিক্রি করতে সহায়তা করতেন মোদী। এই পৌরশহরেই একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।



এর মধ্যে মাধ্যমিকে পড়ার সময় ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (এনসিসি) সদস্য হিসেবেও কাজ করতে দেখা যায় তাকে।



মোদীর সম্প্রদায়ের রীতি অনুসারে কৈশোরে তার বিয়ে ঠিক হয়। তের বছর বয়সে যশোদাবেন চিমনলাল নামে এক মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয় এবং আঠারো বছর বয়সে তাদের বিয়ে সম্পন্নও হয়। তবে, মোদী সাধু জীবন বেছে নেওয়ায় খুব অল্প সময়ে দু’জনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে।

সাধু হিসেবে হিমালয়ের পাদদেশে যে দু’বছর মোদী সাধনায় কাটিয়েছেন সে দু’বছর সম্পর্কে অবশ্য বেশি কিছু জানা যায়নি।


দুই বছর পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পুনরায় চা বিক্রির ব্যবসায় নেমে পড়েন সদ্য ‘সাধু’ হয়ে আসা মোদী। এরপর তিনি গুজরাট রাজ্যে একটি সরকারি ক্যান্টিনের কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন। সেখানে টানা কাজ করার পর ১৯৭০ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে (আরএসএস) প্রচারক হিসেবে যোগ দেন।



নাগপুর শহরে প্রশিক্ষণের পর মোদীকে আরএসএস’র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি দিল্লি
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।



অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের দায়িত্ব পালনে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে মোদী আরএসএস নেতাদের নজর কাড়েন। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলে আরএসএস নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়া ও সংগঠনটির অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান মোদী। ১৯৮৫ সালে তাকে বিজেপিতে পাঠায় আরএসএস। গুজরাট বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে একসময় কেন্দ্রীয় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মোদী।


২০০১ সাল থেকে টানা তিন দফায় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। চা বিক্রেতা থেকে সাধু হয়ে আগামী ২৬ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিচ্ছেন সেই মোদী।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।