ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি মামলা সম্পর্কে যা বললেন দুদক সচিব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি মামলা সম্পর্কে যা বললেন দুদক সচিব দুদক  সচিব মো. মাহবুব হোসেন: ফাইল ফটো

ঢাকা: টানা চার বছর ধরে বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারি অনুসন্ধান করেছে দুদক, মামলা করার পর পেরিয়ে গেছে আরো অর্ধযুগ। গত এক দশকে বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান ও মামলা পর্যায়ে আটকে আছে।

সম্প্রতি আদালত থেকে বেসিক ব্যাংকের তদন্ত তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)  সচিব মো. মাহবুব হোসেন।  

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

মাহবুব হোসেন বলেন, বেসিক ব্যাংকের আর্থিক কেলেঙ্কারির ৫৬টি মামলা হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন মামলাগুলোর তদন্তকাজ যেন তিন মাসের মধ্যে শেষ করার। নির্ধারিত তিন মাসের মধ্যে এগুলো সম্পন্ন করতে কমিশন থেকে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করার চেষ্টা করছি।  

দুদক সচিব বলেন, বেসিক ব্যাংকের প্রতিটি মামলার সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়। সে কারণেই সময় লাগছে। আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করে কাজ করতে বলেছি।

২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ২০১৫ সালের ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনেই আলোচিত ব্যাংক কেলেঙ্কারির ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব ঋণের ক্ষেত্রে ঋণপত্র যাচাই না করা, জামানত বা মর্টগেজ না রাখা , ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করা হয়। এছাড়া ঋণ প্রদানে মানা হয়নি কোনো নিয়ম-নীতি।  

বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদানে অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এখন পর্যন্ত এসব মামলায় আসামি করা হয় ১২০ জনকে। যাদের মধ্যে ৮২ জন ঋণগ্রহীতা, ২৭ ব্যাংকার ২৭ ও ১১ ভূমি জরিপকারী।

ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি করা হলেও ব্যাংকটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি। অনিয়মে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা নেই বলে বরাবরই বক্তব্য দিচ্ছে দুদক, তবে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল হাই বাচ্চু দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের জানান, তিনি সরল বিশ্বাসে এসব ভুল করছেন। তবে এক্ষেত্রে তিনি একা দায়ী নন বলেও জানান।

দুদক সূত্রে জানা যায়, বেসিক ব্যাংকের চারটি শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর গুলশান শাখা থেকে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখা থেকে ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখা থেকে প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা এবং দিলকুশা শাখা থেকে ১৩০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।  

প্রসঙ্গত, আব্দুল হাই বাচ্চুকে  ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে আরেক দফা তার নিয়োগ চু্ক্তি বাড়ানো হয়। ঋণ কেলেঙ্কারির দায়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করা হলে, নিজের পদ থেকে ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন বাচ্চু।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
এসআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।