ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাণিজ্য সম্প্রসারণে কৌশল নির্ধারণ জরুরি: ডিসিসিআই সভাপতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৩
বাণিজ্য সম্প্রসারণে কৌশল নির্ধারণ জরুরি: ডিসিসিআই সভাপতি

ঢাকা: এলডিসি পরবর্তী বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার এবং স্থানীয় শিল্পখাতের প্রস্তুতি বিষয়ে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ জরুরি বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।

তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিতে ৮-১৬ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে।

এ অবস্থায় আমাদের রপ্তানির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরসহ কার্যকর কৌশল নির্ধারণ একান্ত অপরিহার্য।

সোমবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি।

এ সময় ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, বর্তমানে আমাদের রপ্তানির বাজার অধিক মাত্রায় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল, তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকায় নতুন নতুন বাজারে পণ্য রপ্তানিতে আরও বেশি হারে নজর দিতে হবে। সেই সাথে এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে রপ্তানি সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০২৬ সালের পর বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পণ্য আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক হার হ্রাস করা প্রয়োজন, কারণ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের এ হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, আসন্ন রামজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন থাকা প্রয়োজন, যেন সাধারণ মানুষ সহনীয় মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে সক্ষম হয়। পণ্যের মূল্য সহনীয় ও সাধারণ জনগনের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রমজান মাসে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারকদের কর সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে ডিসিসিআই সভাপতি একটি পৃথক ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ গঠনের প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে এবং ‘আরবিট্রেশন অ্যাক্ট ২০০১’-এর প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিনবছর পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা পাওয়া গেলে, আমাদের রপ্তানি সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশ ও আঞ্চলিক ব্লকগুলোর সাথে এফটিএ, পিটিএ ও সেপা সহ অন্যান্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করতে হবে এবং বর্তমান সরকার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।

বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ‘ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজার্স (আইএসএমএস)’ বিষয়ক সুবিধা আদায়ের জন্য দক্ষতা বাড়ানোর ওপর বাণিজ্যমন্ত্রী জোরারোপ করেন। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই এবং দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকার বদ্ধপরিকর।

মন্ত্রী বলেন. কৃষি ও খাদ্য পণ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং আমাদের ‘কৃষি প্রক্রিয়াজতকরণ খাত’ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, যেখানে স্পেনসহ বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং আশা করা যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে এ খাতে আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে সক্ষম হব। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে কৃষি কাজের আওতায় নিয়ে আসার ওপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা এখনও কাজে লাগানো যায়নি, আমাদের এর ওপর আরও অধিক হারে জোরারোপ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।