ঢাকা: রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বাজুস ফেয়ার ২০২৩। জুয়েলারি শিল্পের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন প্রথম দিনেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় জমে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফিতা কেটে বাজুস ফেয়ারের উদ্বোধন করেন দেশের সবচেয়ে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। উদ্বোধনের পর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মেলা প্রাঙ্গণ।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় ঘুরতে এসেছেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। স্টল ও প্যাভিলিয়নে ঘুরে নিজের পছন্দের গহনা দেখছেন তারা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারাও দিয়ে রেখেছেন বিভিন্ন অফার।
ধানমন্ডি থেকে মেয়ে মৌনিতা সরকারকে নিয়ে মেলায় এসেছেন নীলা সরকার। মূলত ছেলে সৌরভ সরকারের বিয়ের গহনা কিনতেই আসা তাদের। নীলা সরকার বাংলানিউজকে বলেন, এক ছাদের নিচে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ধরনের সবচেয়ে ভালো ডিজাইনের গহনা পাওয়া যায় এই মেলায়। তাই ছেলে বিয়ের গহনা দেখতে এসেছি। এ ছাড়া এখান থেকে গহনা কিনলে একদিকে যেমন বিভিন্ন রকম ছাড় পাওয়া যায়, তেমনি মজুরিও দিতে হয় না।
রাজধানীর ভাটারা থেকে ছেলে মাহতির হাসান ও স্ত্রী মাহমুদা হাসানকে নিয়ে বাজুস মেলায় এসেছেন দন্ত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, মেলায় বিভিন্ন ব্যাতিক্রমী গহনা পাওয়া যায়। সাধারণ দোকান থেকে কিনতে গেলে অনেক ঘুরতে হয়। এখানে একসঙ্গে সবগুলো দোকান ঘুরতে পারছি। তবে আজ শুধু দেখতে এসেছি। পছন্দ হলে আগামীকাল কিনব।
মেয়ে সিনথিয়াকে নিয়ে রাজধানীর উত্তরা থেকে মেলায় গহনা দেখতে এসেছেন কাজী লাকি। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গত বছরও এসেছিলাম। সধারণত শো-রুমগুলোতে গিয়ে গহনা দেখতে অনেক সময় লেগে যায়। কিন্তু মেলায় একই জায়গায় অনেক ব্র্যান্ড থাকায় সময় কম লাগে। ডিজাইনও ভালো পাওয়া যায়। তাই মেলায় আসা।
প্রথম দিনেই বাজুস মেলা জমে উঠছে। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা বিক্রেতাদের।
রয়েল মালবার জুয়েলার্সের ম্যানেজার বাকি বিল্লাহ বকুল বলেন, গত দুই বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। গত বছরও ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম আমরা। এই বছর উদ্বোধনের দিনেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার, এরপরও এমন সাড়া অভাবনীয়। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিন। ওই দুই দিন দর্শনার্থীদের চাপ বাড়বে।
বাজুস মেলায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের অফার দিচ্ছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বর্ণের গহনা কিনলে মজুরির ওপর দেওয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড়। কেউ কেউ আবার কোনো মজুরিই নিচ্ছে না। ডায়মন্ডের গহনায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া গিফট ভাউচার, র্যাফেল ড্র ও গেম খেলে পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ থাকছে ক্রেতাদের জন্য।
আগামী শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত চলা এই মেলার আয়োজন করেছে সারা দেশের প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের সংগঠন বাজুস। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এই জুয়েলারি মেলা। মেলার প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য লাগবে না কোনো প্রবেশমূল্য।
দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা এই মেলায় রয়েছে ৮টি প্যাভিলিয়ন, ১২টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৩০টি স্টল, যেখানে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
এসসি/আরএইচ