ঢাকা: পর্দা উঠল ১৫তম ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ার (আইপিএফ) ২০২৩-এর। বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) এবারের মেলার অন্যতম আয়োজক।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসিবি) মেলার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্লাস্টিক খাত অনেক সম্ভাবনাময়। আপনারা আবার মেলা শুরু করেছেন, সে জন্য আমি খুশি। বর্তমানে আমরা এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। সুতরাং আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে৷ আর এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সব সময় বেসরকারি খাতের সঙ্গে আছে৷ আমি মনে করি বেসরকারি খাতের উন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব না। ইতোমধ্যেই আমরা এ সেক্টরের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি৷ আগামী দিনেও শিল্প মন্ত্রণালয় এ খাতের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
পরে, মন্ত্রী ফিতা কেটে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সরকার থেকে প্লাস্টিক খাতে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বাজেটে ট্যাক্স ১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি হলে ১০ শতাংশ ট্যাক্স। একইসঙ্গে ক্যাশ ইনসেন্টিভ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্লাস্টিক পণ্যের বিশ্বব্যাপী ৮০০ বিলিয়ন ডলারের যে আন্তর্জাতিক বাজার আছে, সেখানে যদি আমরা ১ শতাংশও বাজার নিতে পারি তাহলে ৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশে আইন-কানুন কড়াকড়ি থাকে, সেজন্য পণ্য উৎপাদনের সময় দূষণসহ সব কিছু মাথায় রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা আশা করব, আন্তর্জাতিকভাবে যে উল্লেখযোগ্য বাজার, সেটা আমরা নিতে পারব। আগামী দিনেও এ খাতে সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, দেশের প্লাস্টিক শিল্পের বিকাশ এবং উন্নয়নে আয়োজিত মেলার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। প্রতি বছর প্লাস্টিক সেক্টরে একটা বড় প্রবৃদ্ধি আছে। এসডিজি বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে, একইসঙ্গে থাকবে অনেক সম্ভাবনাও। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। প্লাস্টিক খাতে বিশাল সম্ভাবনা আছে জানিয়ে এ খাতের ব্যবসায়ীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। একই সঙ্গে কম্পলায়েন্স কারখানা গড়ে তোলারও আহ্বান জানান।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে আসার জন্য এনজিওগুলোকে আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে ২ মিলিয়ন টন প্লাস্টিকের চাহিদা আছে, পুরোটাই আমরা আমদানি করি। যদি বর্জ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে রিসাইক্লিং একটি ফ্যাক্টরি গড়ে তোলা যায়, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে।
বিশ্বের ২১টি দেশ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক এ ফেয়ারে অংশগ্রহণ করেছে। প্রদর্শনীতে যেসব দেশ অংশগ্রহণ করছে তন্মধ্যে- চীন, তাইয়ান, ভারত, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ইউএসএ, ফ্রান্স, হংক ইটালি, জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত উল্লেখযোগ্য।
প্লাস্টিক মেলা ১৯৮৯ সাল থেকে বিপিজিএমইএ এবং বিসিক দ্বারা যৌথভাবে আয়োজিত একটি স্বল্প পরিসরে অংশগ্রহণে প্রথম প্রবর্তিত হয়েছিল। সর্বশেষ ১৪তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলা বিভিন্ন দেশ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। করোনার কারণে ৩ বছর মেলা বন্ধ ছিল।
১৫তম প্লাস্টিক মেলায় বাংলাদেশসহ মোট ২১টি দেশ থেকে ৪৯৪টি কোম্পানি ৭৫০টি স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করবে। এতে মেশিনারীজ, মোল্ড, কাচাঁমাল উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ দেশে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অংশগ্রহণ করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মনসুরুল আলম, বিপিজিএমইয়ের সভাপতি সামিম আহমেদ, ইয়রকার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসেস কোম্পানি লি. এর সভাপতি জুডি ওয়াং।
প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
এমকে/জেডএ