ঢাকা: গত বছরের তুলনায় চলতি রমজান মাসে ফলের বাজার বেশ চড়া। বিদেশ থেকে আমদানি করা ফলের দাম আগে থেকেই বাড়তি ছিল, অন্যদিকে দেশি ফলের উৎপাদন, পরিবহন এবং অন্যান্য খরচ বেশি হওয়ায় দেশি ফলের দামও বেশি।
পাশাপাশি দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দৈনিন্দন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতেই নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। তাই ক্রেতারা অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও ফল কেনা থেকে বিরত থাকছেন।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়া, কাজিপাড়া এবং মিরপুর ১০ নম্বরের বিভিন্ন ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে এবং ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে ফলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। তবে ফলের দাম বাড়তি। নিত্যপণ্যের বাজার চড়া থাকায় মানুষ এমনিতেই চাপে আছেন। তাই তারা ফল কিনছেন কম।
কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা বলেন, বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেশি। নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাই খরচ কমাতে ইফতারে ফলের ব্যবহার অনেকেই কমিয়ে দিয়েছেন।
মিরপুর ১০ নম্বরে কলা কিনতে আসা একজনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে ফলমূল খেলে শরীর ভালো লাগে। অন্য ফলের দাম বেশি তাই কলা কেনার জন্য এসেছি। কিন্তু কলার দামও বেশি, আগে যে কলা কিনতাম ৭০ থেকে ৮০ টাকায় এখন সে কলাই ১০০ টাকার বেশি দাম।
মিরপুর-১০ নম্বর ফল বাজারে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেখা যায় ফলের দোকানগুলোতে তেমন কোনো ভিড় নেই। মাঝে মাঝে ক্রেতা আসলেও বেচাকেনা হচ্ছে একেবারেই সামান্য। আবার অনেকেই দাম শুনে ফল না কিনেই চলে যাচ্ছেন।
মিরপুর ১০ নম্বর ফুট ওভারব্রিজের পাশেই বিভিন্ন ধরনের দেশি বিদেশি ফল বিক্রি করেন মো. বাবু। এবার রমজানে ফলের বেচাকেনা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম বেশি। মাসের শেষ মানুষের হাতে টাকা নেই, সামনে ঈদও আসছে, এখন মানুষ বাড়ি ভাড়া দিবে? কাপড় চোপড় কিনবে? না ফল খাবে না ঈদ পালন করবে এসব নিয়েই দিশেহারা।
গতবার রোজার তুলনায় এবার বেচাকেনা কেমন জানতে চাইলে তিনি আর বলেন, গতবার রমজানে বিকেলে অনেক বেচাকেনা ছিল, সেই তুলনায় এবারে বেচা-কেনা নেই। দেখেন প্রায় প্রতিটা দোকানেই ক্রেতা নেই।
একাধিক ফল বিক্রেতা বাংলানিউজকে রোজার আগের তুলনায় বর্তমানে বিদেশি ফলের দাম কিছুটা কমেছে বলে জানান।
এদিন বাজারে ফলের আকার ও মান অনুযায়ী বাজার মূল্য,
বিদেশি ফল, লাল আপেল প্রতিকেজি ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, সবুজ আপেল ২৫০-৭০ টাকা, সবুজ আঙ্গুর ২২০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, কালো আঙুর ৩২০-৩৮০ টাকা, লাল আঙ্গুর ৪৬০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। আনার ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা। ড্রাগন ফল বিদেশী ৪০০ টাকা কেজি, মাল্টা ২০০ থকে ২২০ টাকা, চায়না ছোট মিষ্টি কমলা ২০০টাকা কেজি, কমলা হলুদ ২৫০, সবুজ কমলা ২০০ টাকা কেজি।
দেশি ফল: তরমুজ প্রতিকেজি ৪০ টাকা, সবরি কলা প্রতি ডজন ৯০ থেকে ১২০ টাকা, ডাব আকার অনুযায়ী ৮০ থেকে ১২০ টাকা, বেল ৫০ থেকে ২০০ টাকা, পেয়ারা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আনারস ৪০ থেকে ৬০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
আরকেআর/জেএইচ