ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমের লাভ তুলে নিচ্ছে ফড়িয়ারা!

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৩
আমের লাভ তুলে নিচ্ছে ফড়িয়ারা!

ঢাকা: মৌসুমী ফলে ছেয়ে গেছে দেশের বাজার। ক্রেতারাও কিনছেন নানা রকমের ফল।

অন্যান্য ফলের তুলনায় ফলন ভালো হওয়া এবং দাম হাতের নাগালে থাকায় মৌসুমের প্রধান ফল আমের প্রতি ঝুঁকেছেন ক্রেতারা। আমের বাম্পার ফলন হলেও বাগানের মালিকের মনে আনন্দ নেই। অন্যান্য ফলের দাম আকাশচুম্বি হলেও আমের বাজারে দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। হাতবদলের মাধ্যমে আমের লাভ তুলে নিচ্ছেন ফড়িয়ারা। ভালো দাম না পাওয়ায় আম চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা গেছে।

তারা জানিয়েছেন, বাম্পার ফলন হলেও আম বিক্রি করে লাভ গুণতে পারছেন না কৃষক। পাইকারি ও খুচরা বাজারে আমের দামের ব্যবধান প্রায় শতভাগ। অথচ এই লাভের বড় অংশ চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। বাগান মালিকরা আম উৎপাদন করে লাভের মুখ না দেখতে পারলেও এই লাভের পুরোটাই করছেন ফড়িয়ারা।  

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম উৎপাদনকারী সুমন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ফলন ফলিয়ে পাইকারি বাজারে আম বিক্রি করে দাম পাচ্ছি না। অথচ আমাদেরই এই আম আমাদের কাছ থেকে কিনে ভোক্তার কাছে তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। ফড়িয়ারা আমের পুরো লাভ তুলে নিচ্ছেন।  

যে আম আমরা পাইকারি বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করছি সেই আম কিনেই ফরিয়ারা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। অনেক সময় এর চেয়েও বেশি দাম নিচ্ছেন বলে জানালেন নওগাঁর আম বাগানের মালিক আমিনুল ইসলাম।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ইদানিং আমাদের এখানে কিছু লোক এসে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও করে নিয়ে নিজেদের বাগান বলে প্রচার করে অনলাইনে আম বিক্রি করছেন। পাইকারি বাজার থেকে ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে আম কিনে সেই আম ৭০ থেকে ৯০ টাকা করে দরে বিক্রি করছেন তারা।  

তিনি আরো বলেন, আমের বাজার ধরে রাখতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। সরাসরি আম এনে কৃষক যাতে ভালো দামে ভোক্তার কাছে বিক্রি করতে পারেন সেজন্য কমোডিটি মার্কেট চালু করতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চল অনেক খামার রয়েছে। সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অনেকেই কম দামে আম বিক্রি করতে বাধ্য হন। যার ফলে আগামীতে খামারিরা আম উৎপাদনে আগ্রহ হারাতে পারেন।  

এদিকে অনলাইনে আম অর্ডার করে কেউ কেউ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। দরদাম ঠিক করে বুকিং নিলেও আম পাঠাচ্ছেন না এমন অভিযোগও রয়েছে।

 এ ব্যাপারে মিরপুরের বাসিন্দা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইনে ৩০ কেজি আমের অর্ডার দিয়েছিলাম। ৫০ টাকা দরে দাম করে অর্ডার করার সময় নগদ ৭০০ টাকা বিকাশে পরিশোধ করি কিন্তু এরপর দিন থেকেই ওই নম্বর বন্ধ পাই। অনলাইনে অর্ডার করে আরো অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।  

অন্যদিকে কৃষকের কথা চিন্তা করে হলেও কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আমের বাজার তৈরি হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে কৃষক সহজেই সঠিক দামে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে পারবে। এতে করে দেশের অর্থনীতিতে গতি বাড়বে বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২৩
এসএমএকে/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।