ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী সিনেটর টিম আয়ার্স।
শুক্রবার (২১ জুলাই) অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠককালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ সময় হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দিকী কৃষি, তৈরি পোশাক শিল্প, রেমিটেন্স, ক্ষুদ্র অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গত দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসা করেন তিনি।
দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কটন, উল, এলএনজি, অর্থনৈতিক প্রযুক্তি, তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কিত সেবা এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুযোগ রয়েছে বলে আল্লামা সিদ্দিকী উল্লেখ করেন। অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রীকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানান বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দক্ষ ও টেকসই সরবরাহ ব্যবস্থা এবং উৎপাদনশীলতাসহ শ্রমিকদের কল্যাণার্থে এ খাতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সংস্কারমূলক কর্মসূচি এবং অধিক গ্রিন ফ্যাক্টরি স্থাপন, নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিতকরণ, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বিজিএমইএর ইএসজি অর্জনের লক্ষ্যের বিষয়টিও তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহকারী মন্ত্রীকে অবহিত করেন।
সহকারী মন্ত্রী টিম আয়ার্স বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দুদেশের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা ও বাংলাদেশের উৎপাদকদের দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক এ শিল্পকে বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য এবং সরকারের সম্পৃক্ততার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো টেকসই শ্রমিক ইউনিয়ন এবং শ্রমিক সংগঠন।
তিনি অস্ট্রেলিয়ার উল ও কটন শিল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশের ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টকে (টিফা) পরবর্তী স্তরে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন টিম আয়ার্স ।
বর্তমানে বিজিএমইএর ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অস্ট্রেলিয়া সফর করছে। গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় মেলবোর্নে দলটি তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক সম্মেলনের আয়োজন করে।
এ ছাড়া সিডনিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যৌথভাবে এক সভার আয়োজন করে। এতে সিডনিতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সক্ষমতাকে তুলে ধরা হয়। সভায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা, ব্র্যান্ড ও শিল্পপ্রতিনিধিসহ ৩৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২৩
টিআর/আরএইচ