ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাবান্ধায় পাথর আমদানি বন্ধ, ব্যবসায়ী-শ্রমিক বিপাকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
বাংলাবান্ধায় পাথর আমদানি বন্ধ, ব্যবসায়ী-শ্রমিক বিপাকে

পঞ্চগড়: দেশের সড়ক পথের একমাত্র চারদেশীয় স্থলবন্দর (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান) পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা দিয়ে গত ২২ দিন ধরে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা। এতে পহেলা আগস্ট থেকে স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের কার্যক্রম।

জানা গেছে, সরকারিভাবে স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ বিদেশি মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু টন প্রতি ১২ ডলারের পরিবর্তে ১৩ ডলার করায় বন্ধ রয়েছে বোল্ডার পাথর আমদানি। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। স্থলবন্দর ইয়ার্ডসহ পুরো এলাকাজুড়ে নেমেছে স্থবিরতা।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

এদিকে বন্দরের কার্যক্রম না হওয়ায় কর্মহীন হয়ে সংকটে পড়েছে বন্দর এলাকার দোকান ব্যবসায়ী, ট্রাক ও অটোরিকশার চালকেরা। দ্রুত সমস্যা সমাধানে সরকারের সহায়তা কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

লোকসানসহ আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি শুল্ককর প্রত্যাহার না করায় বন্ধ রয়েছে পাথর আমদানি। অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু আগের মতো রাখার দাবিতে আমদানি বন্ধ রেখেছেন তারা।  

ক্ষুদ্র পাথর ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দিনের পর দিন নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দরটি। এ বন্দরকে ঘিরে চলে পুরো তেঁতুলিয়াবাসীর জীবিকা। কিন্তু গত ২২ দিনে সবাই কর্মহীন অবস্থায় দিন পার করছি।

সুমন ইসলাম নামে আরেক পাথর ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, সরকার যে কর বাড়িয়েছে, তাতে লোকসানে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। কর আগের মতো রাখার দাবি সবার।

এদিকে শ্রমিক হাবিবুর রহমান হাবলু, খাইরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ বন্দরের সঙ্গে আমাদের জীবিকা জড়িত। এলাকায় অন্য কাজ না থাকায় এখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। কিন্তু বন্দরে আমদানি না হওয়ায় গত ২২ দিন ধরে বেকার সময় কাটাচ্ছি। বন্দরে কাজ করে পরিবার চালাই। কিন্তু বন্দরে একের পর এক ঝামেলার কারণে খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আয় রোজগার হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে মানবেতর দিনযাপন করতে হচ্ছে।  

একই কথা জানান বন্দর এলাকার দোকানি, ট্রাক ও ইজিবাইকের চালকেরা।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়ানোর কারণে আমদানিকারকদের খরচ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। লোকসানে পড়ে তারা আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।  

বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ভারত ও ভুটানের মধ্যে স্লট বুকিং ফি বাবদ চলা দ্বন্দ্বের পর জুলাইয়ের শেষের দিকে ভারত থেকে কিছু পাথর আমদানি হলেও আবার তা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বন্দর সংশ্লিষ্ট সবাই কর্মহীন সময় পাড় করছেন। একই সঙ্গে সরকার রাজস্ব আয় থেকে পিছিয়ে পড়ছে।

সরকারিভাবে শুল্ককর বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ভারত ও ভুটানের মধ্যে স্লট বুকিং নিয়ে ঝামেলার পর ভুটান পাথর দেওয়া বন্ধ রাখলে ভারত থেকে আমদানি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। তবে কি কারণে নতুন করে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে, তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা তাপস কুমার সাহা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।