ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

ঢাকা: অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। এতে বাংলাদেশের বাজারে বেড়েছে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম।

এদিকে সুযোগ পেয়ে দেশি পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে আমদানি করা প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায়। যা কেজিতে পড়ছে ৫৬ টাকা থেকে ৬০ টাকা। অথচ গত সপ্তাহে অর্থাৎ ভারত সরকারের শুল্ক আরোপের আগে এই এই বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা পাল্লা। কেজিতে পড়েছিল ৪৮ টাকা থেকে ৫২ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দেশের বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ১০-১৫ টাকা। গত দুইদিনের তুলনায় আজ কিছুটা দাম কম আছে।

এদিকে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির সুযোগে দেশি পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারে বর্তমানে প্রতি পাল্লা ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকা, কেজিতে পড়ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা। এছাড়া পাবনার হাইব্রিড পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, কেজিতে ৮০ টাকা এবং পাবনার (অরজিনাল) পেঁয়াজ ৪৪০ টাকা, কেজিতে ৮৮ টাকা।

অথচ গত সপ্তাহে এই বাজারে ফরিদপুরের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়, পাবনা (হাইব্রিড) পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা এবং পাবনার (অরজিনাল) পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা।

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজবিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর ট্যাক্স বসানোয় সেখান থেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ আসছে। যার কারণে দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি। আর দেশি পেঁয়াজের সংকট থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আড়তদাররা দেশি পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

সামছু মিয়া নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আমদানি করতেই ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি পড়ছে। আমরা তাদের কাছ থেকে কিনে এনে কিছুটা লাভ করে বিক্রি করি। এখানে ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই।

তবে দাম ফের কিছুটা কমতে পারে বলে মত বিক্রেতার নাছিরুলের। বললেন, গত দুই দিনের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। সামনে আরো একটু কমতে পারে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম যে কারণেই বাড়ুক, এর খেসারত দিতে হচ্ছে ক্রেতাদেরই। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পেঁয়াজের বাজারের এমন অস্থিরতা নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের বেশ ভোগাচ্ছে।

মো. রিয়াজ নামের এক ক্রেতা বলেন, এদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা জিম্মি। দাম বাড়ুক, আর কমুক, আমাদের তো কিনতেই হয়ে। পেঁয়াজের দাম ৫০০ টাকা কেজি হলেও কিনতে হবে। ব্যবসায়ীদের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজে, অথচ দাম বেড়েছে দেশি পেঁয়াজেরও। আমাদের ব্যবসায়ীরা সুযোগ সন্ধানী।

পেঁয়াজের বাজারের এই অস্থিরতার জন্য সরকারকেই দুষলেন আরেক ক্রেতা মো. মিজানুর রহমান।  

তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে প্রথমত দায়ী সরকারে পক্ষ থেকে যথাযথ মনিটরিং না করা। নইলে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর পরই কীভাবে দাম বেড়ে যায়। পেঁয়াজটা তো আসতে সময় লাগে। ব্যবসায়ীরা তো সুযোগ নেবেই। কিন্তু তারা যেন সেটা না করতে পারে, সেই দায়িত্ব সরকারের। এছাড়া আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলেও হয়।

গত ১৯ আগস্ট হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ভারত। যা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর আগে শুল্কমুক্তভাবেই দেশটি থেকে পেঁয়াজ আসতো বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩ 
এসসি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।