ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডাবের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
ডাবের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ

ঢাকা: ডাবের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, ডাব ব্যবসায়ীদের ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ, পাকা ভাউচার ও ডাবের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) থেকে আমরা সারা দেশে এটি পরীক্ষা করবো। এগুলো করার পর বাজারে যদি প্রভাব না পড়ে, তাহলে পরবর্তীতে আমরা আরও কাজ করবো। ডাবের বাজার যতদিন স্থিতিশীল না হবে, ততদিন আমরা এখানে কাজ করবো।

সোমবার (২৮ আগস্ট) যৌক্তিক মূল্যে ডাব ক্রয়-বিক্রয় বিষয়ক সচেতনতামূলক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়।

ডিজি সফিকুজ্জামান বলেন, আমি কোনোদিন চিন্তা করিনি, ডাব নিয়ে আমাকে এভাবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসতে হবে। ডাবও এখন আমাদের টক অব দ্য কান্ট্রি। আমি ভাবিনি ডাব নিয়ে আমাদের এভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, গত কিছুদিন ধরে ডাবের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গুরোগের একটি বড় চিকিৎসা হলো তরল পানি পান করা। এজন্য প্রাকৃতিক ডাবই হলো সবচেয়ে উত্তম পানীয়। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে ডাবের চাহিদা বাড়ায় পণ্যটি দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ডাবের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। ডাবের দাম বাড়ানোর সুযোগ এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে নিচ্ছে।

ডেঙ্গুকে পুঁজি করে ডাবের দাম বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে ডিজি সফিকুজ্জামান বলেন, এটি স্পষ্ট। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা চাই ডাব ব্যবসায়ীরা সম্মানের সঙ্গে এ ব্যবসা করবেন। অতি মুনাফাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করে যাবো।

সম্প্রতি ডাবের আড়তে ও বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে জানিয়ে ডিজি সফিকুজ্জামান বলেন, আমরা যেসব তথ্য পেলাম, তাতে ডাবের দাম খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা। আশা করি ডাবের বাজারের যে অস্থিরতা সেটি নিরসন হয়ে ৭০-৮০ শতাংশ দাম কমে যাবে।

তিনি বলেন, আজকে এখানে ব্যবসায়ীরা ডাবের দাম বাড়ানোর যেসব কারণ বললেন, এগুলো অপ্রত্যাশিত নয়। আপনারা অনেক অজুহাত দাঁড় করাবেন। ব্যবসায়ীরা ১০ শতাংশ লাভ করবেন, এটা যৌক্তিক। কিন্তু আপনি যদি এক সপ্তাহে বিনিয়োগের পুরো টাকা উঠিয়ে নেন, সেটা তো ব্যবসা হতে পারে না। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। আমি চাই, ব্যবসায়ীরা একটি সিস্টেমের মধ্যে আসুক। প্রচলিত আইন মেনে চলুক।

সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা কখনো চাই না ব্যবসায়ীদের জরিমানা করি। আমরা ব্যবসায়ীদের বারবার বলি, প্রচলিত আইন মেনে ব্যবসা করার। ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা রশিদ রাখতে। যাতে আমরা পণ্যের দামটা শনাক্ত করতে পারি। ডাব ব্যবসায়ীরা যদি নিয়মের মধ্যে না আসেন, তাহলে আমাদের তদারকি অভিযান একটানা চলতো থাকবে।

সভায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ডাবের দাম বাড়ার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন। ডাবের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তারা ডাবের উৎপাদন কম হওয়ার কথা জানান। পাশাপাশি তারা একে অন্যকেও অযৌক্তিকভাবে বেশি দামে ডাব বিক্রির জন্য দায়ী করেন।

সভায় সাম্প্রতিক সময়ে ডাবের বাজার ও আড়তে অভিযান চালানো ও ডাবের বাজারের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডল।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবিরসহ এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ডাব ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।