ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘রেমিট্যান্স ঠিক তো অর্থনীতিও ঠিক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
‘রেমিট্যান্স ঠিক তো অর্থনীতিও ঠিক’

ঢাকা: রেমিট্যান্স ঠিক তো অর্থনীতিও ঠিক। রেমিটেন্স যদি বাড়তো, দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে আয়োজিত দিনব্যাপী ‘পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল সামিটে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে এখন বৈধপথে অনেক বেশি মানুষ বিদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে দেশে রেমিট্যান্স আসছে না। রেমিট্যান্সটা যদি বাড়তো, তাহলে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।

কেন রেমিট্যান্স বাড়ছে না, এটার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজতে হবে। সমাধানের পথ বের করতে হবে। রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার এ সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কাঠামোগত সংস্কার প্রস্তাব বা পরামর্শ চাইবে বলেও জানান তিনি।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদেশ যাচ্ছে তো বহু মানুষ। তারা সেভাবে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে না। যেভাবে রেমিট্যান্স আগে আসতো, এখন তার চেয়েও বেশি আসার কথা। অথচ ধীরে ধীরে তা কমে যাচ্ছে। এটার চিন্তার বিষয়, খতিয়ে দেখার বিষয়। কেন এমনটা হচ্ছে, সেটাই এখন খুঁজছি আমরা।

এ সময় ‘রেমিট্যান্স ঠিক তো অর্থনীতিও ঠিক’ বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, দ্রুত রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সমাধানের পথ বের করতেই হবে। এর কাঠামো সংস্কার করতে হবে।

দেশের অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞর কাছে এ ব্যাপারে চমৎকার কিছু উদ্ভাবনী পরামর্শ চান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখতে সংস্কারের প্রস্তাব দেন; আমাদের ভালো ভালো পরামর্শ দেন; আমরা তা গ্রহণ করবো এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

জিডিপি ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের জিডিপি তো বেশ ভালো। করোনার মধ্যেও আমরা জিডিপি ধরে রাখতে পেরেছি। শুধু বাড়ানোর দিকে নজর না দিয়ে, এটাকে (জিডিপি) কীভাবে আরও টেকসই করা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন বিশ্বব্যাংকের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্র্যাকটিসের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্র্যাকটিস ম্যানেজার হিশাম ওয়েলি। তিনি বলেন, ‘সত্যিই বাংলাদেশ ভালো করছে। সম্প্রতি সর্বজনীন পেনশন স্কিমটা আমি দেখেছি। সেটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি আমরা। এ স্কিমের দিকে সরকারকে কঠোর নজর রাখতে হবে। এখানে নাগরিকদের সঞ্চয় করা অর্থ জমানো হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কাজ করার আহ্বান জানাবো আমরা। ছিন্নমূল মানুষ, প্রত্যন্ত এলাকার জনগণ যেন শহরের মানুষের মতো সুযোগ-সুবিধা পান, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আর এটা বাস্তবায়নে অর্থ বিভাগকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। আশা করি- বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের দায়িত্বে থাকা চৌকস কর্মকর্তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত এক দশকে অর্থনীতিতে অনেক উন্নতি করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই দেখতে চায়। বাংলাদেশ সরকারকে সিনিয়র সিটিজেনের (বয়স্ক নাগরিক) সুরক্ষা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে হবে। অর্থপাচার ও সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এগিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী- গত আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। যা তার আগের ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২২ দিনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।

পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল সামিটের সভাপতিত্ব করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।