ঢাকা: অর্থনীতি চালাতে গেলে অর্থনীতির জন্য মূল্যস্ফীতি প্রয়োজন আছে। যারা অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করে না, তারা বলতে পারে মূল্যস্ফীতির প্রয়োজন নেই।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন, এরপর নতুন কেবিনেট হবে। তা কেমন দেখতে চান বা প্রত্যাশা কী, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কাল এমপিরা শপথ নেবেন, তারপর অন্য ধাপে যাবেন। সে বিষয়ে এখন আলাপ করা ঠিক হবে না।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে আপনার এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি না, যা আপনি পূরণ করতে পারেননি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যেভাবে অর্থনীতি শুরু করি, সেভাবে থাকতে পারিনি। কারণ একটার পর একটা যুদ্ধ লেগেই রয়েছে। ফলে অর্থনীতির কোনো কিছু ধারণা করা যায় না। তারপরও আমরা ভালো অবস্থানে আছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় পাঁচগুণ বেড়েছে। রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন আমাদের ২৫ বা ২৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে। এ বছর আমাদের চিন্তা হলো ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামতে না দেওয়া। এটি সম্ভব, আমরা আগে যা বলেছি তা ঠিক আছে।
সিপিডি সম্প্রতি বলেছে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। তা উদ্ধারের জন্য কোনো পরিকল্পনা করেছেন কি না, বা নতুন সরকার কী পরিকল্পনা করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, মাত্র নির্বাচন হলো, এমপিরা শপথ এখনও নেননি, নতুন সরকার গঠন হয়নি। তাই নতুন সরকার গঠনের আগে এসব বিষয়ে বলা ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির যে এলাকা রয়েছে, তা আপন মহিমায় উপরে উঠেছে। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের অর্থনীতি, ৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা, তা অর্জন করতে পারব। আমরা বিশ্বাস করি ৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০টি উন্নত দেশের একটি হবে বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ যা বলে, তা তাদের শিখিয়ে দেওয়া হয় না। গবেষণার মাধ্যমে তারা করে। পৃথিবীর যেসব দেশ ঋণ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে আমাদের জিডিপি ৩৪ শতাংশ। যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন।
সিপিডির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যখন ক্ষমতা নিই, তখন তারা আমাদের বারবার বলেছিল, টাকার অবমূল্যায়ন করে দিতে। তা না করলে এক ঘণ্টাও টিকতে পারব না। আমরা তো টিকে আছি। বাজারে গেলে জিনিসপত্র কেনা যাচ্ছে। যারা বিক্রি করছে, তাদের কিছু তো ফেরতও আসে না।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি চালাতে গেলে অর্থনীতির জন্য মূল্যস্ফীতির প্রয়োজন আছে। যারা অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করে না, তারা বলতে পারে মূল্যস্ফীতির প্রয়োজন নেই। মূল্যস্ফীতি ছাড়া অর্থনীতি চলতে পারে না। কয়েক দিন আমরা ৮ থেকে ১০ বছরের মতো মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। এর চেয়ে ভালো নম্বর আর হতে পারে না।
অর্থনীতি নিয়ে নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সামনের সরকার আসুক, তখন সেটা বলা যাবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত বলেছেন, আগামীতে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে অর্থনীতি, আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখতে হবে। গতিশীল রাখতে হবে, কোনোভাবেই যাতে পথ না হারায়, এটাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতে অর্থনীতিই হলো মূল চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, ঠিক বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে চিন্তা করেন, আমরাও একই চিন্তা করি। আমাদের আলাপ আলোচনা হয়। অর্থনীতি দুর্বল হলে সরকার কীভাবে টিকে থাকবে, আর দেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে? আমি এখনো বলি, আমরা ভালো অবস্থানে আছি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা যদি আসে, তাহলে তো তৈরি পোশাক খাতে প্রভাব পড়বে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জোর করে কেউ কিছু করলে আমরা কি কিছু করতে পারি? কোনো অপরাধ করলে শাস্তি আছে। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো অপরাধ করেনি। অপরাধ করলে ধরা পড়ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
জিসিজি/আরএইচ