ঢাকা: মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশকে ডিউ ডিলিজেন্স বা নিয়মকানুন পালন করতে তাগিদ দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, নিয়ম না মানলে নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের জন্য ব্র্যান্ডগুলো বাধ্য হবে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ‘আইনের যথাযথ পরিপালন’ বিষয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ কথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যে ডিউ ডিলিজেন্স আইন করা হয়েছে, তা শুধু ক্রেতা–বিক্রেতার বিষয় নয়; সরবরাহ চেইন সবার পালনের জন্যই করা হয়েছে। শিশুশ্রম, বাধ্যতামূলক শ্রম, দাসত্ব (স্লেভারি), বন ধ্বংস, পরিবেশদূষণ, ইকোসিস্টেমের ক্ষতি করা ও মানবাধিকারের মতো বিষয় এসব নিয়মকানুনের মধ্যে রয়েছে। সুতরাং এসব শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের একার স্বার্থ নয়, এর সঙ্গে বৈশ্বিক স্বার্থ যুক্ত।
চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ২০২৬ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে বাংলাদেশকে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তাই ডিউ ডিলিজেন্স আইনকে আলাদা হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। এ–সম্পর্কিত প্রায় ৩২টি কনভেনশন রয়েছে। বাংলাদেশকে এগুলো শুধু অনুসমর্থন নয়, বরং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু বিধিবিধান পাস হয়েছে। যদিও এসবের মূল সারমর্ম প্রায় একই, তারপরও প্রতিটির জন্য আলাদা নিরীক্ষা করতে হয়। আইনগুলো সার্বজনীন ও বৈশ্বিকভাবে পালনযোগ্য হওয়া উচিত।
মূল বক্তব্যে ইইউর ডেপুটি হেড অব মিশন বার্নড স্প্যানিয়ার বলেন, স্থানীয় দুর্বল নিয়ম ও কম দামে ক্রয়াদেশ নেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ খাতে অনেকেই নিয়মকানুন মেনে চলেন না। আমরা বাংলাদেশে রানা প্লাজাধসের ঘটনা এবং করোনার সময় কিছু ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের দায়িত্বহীনতা দেখেছি। এসব ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্বেচ্ছায় নিয়মকানুন মানছে না। এ জন্য সরবরাহ খাতে সুশাসন থাকা প্রয়োজন।
বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বিভিন্ন বিধিবিধান পরিপালন করতে আমাদের মূলত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য এটা বড় ধরনের ব্যবসা। আমরা সব ধরনের শর্ত মানলেও পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাই না। সব কমপ্লায়েন্স মানার শর্ত দিলে, এই অতিরিক্ত ব্যয় বহনের মত পণ্যের দামও দিতে হবে।
এ বিষয়ে বার্নড স্প্যানিয়ার বলেন, দাম নির্ধারণ হচ্ছে ক্রেতা–বিক্রেতার মধ্যে নেগোসিয়েশনের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা ক্রেতাদের বাধ্য করতে পারি না।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
জেডএ/এইচএ/