সাতক্ষীরা: স্থানীয় মৎস্যসেট থেকে কেনা হয় পুঁটি, সিলভার কার্প, মৃগেল, বাটা ও তেলাপিয়া মাছ। তারপর তা ধুয়ে নাড়ি-ভুড়ি বের করে লবণ মাখিয়ে রাখা হয় ড্রামে।
একদিন পর আবার ধুয়ে শুকাতে দেওয়া হয় মাচায়। তিনদিন রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। এমনই প্রক্রিয়ায় সাতক্ষীরা শহরতলীর বিনেরপোতায় উৎপাদন করা হচ্ছে মিঠা পানির শুঁটকি। যা চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ভোলানাথপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বছর তিনেক আগে গড়ে তুলেছেন এ শুঁটকির খামার। তার খামারে দিনভর কাজ করেন ৩০-৩২ জন শ্রমিক।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের খামারে কেউ মাছ ধুচ্ছেন, কেউ মাছ কেটে নাড়ি-ভুড়ি বের করছেন, কেউ লবণ মাখাচ্ছেন, কেউ মাছ মাচায় নেড়ে দিতে ব্যস্ত, কেউ বা আগে শুকাতে দেওয়া মাছ উল্টে পাল্টে দিচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত গ্রেডিংয়ে।
প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, বাজার থেকে বিভিন্ন দামে প্রয়োজনীয় মাছ কিনে শুঁটকি তৈরি করা হয়। তারপর সেই শুঁটকি চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন শুঁটকির বাজারে বিক্রি করা হয়। যেহেতু রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়, তাই আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভও হয় ভালো। গ্রেড ভেদে ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয় শুঁটকি। বছরে আট মাস চলে এ ব্যবসা।
তার এ কাজের সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতে বেশ পুঁজি লাগে। অনেক শ্রমিক খাটাতে হয়। আমার খামারেই প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টাকা মজুরি দিতে হয়। এছাড়া মাছ কেনা, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মিঠা পানির শুঁটকি উৎপাদনে সম্ভাবনার দ্বার খুলে যেতে পারে।
জেলা মৎস্য দপ্তরে মিঠা পানির শুঁটকি উৎপাদন নিয়ে কোনো তথ্য না থাকলেও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, সাতক্ষীরায় বছরে ৫০ থেকে ৫৫ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরায় বছরে প্রায় দুই লাখ টন সাদা মাছ উৎপাদন হয়। এজন্য মিঠা পানির মাছের শুঁটকি উৎপাদনে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে আগামীতে মৎস্য দপ্তর কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৪
এসআই