রাজশাহী: রাত পোহালেই ঈদ। কেনাকাটাও প্রায় শেষ।
আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) চাঁদরাত। তাই শেষ দিনে রাজশাহী মহানগরের মার্কেটগুলোতে সকাল থেকে বাড়তি ভিড় দেখা যাচ্ছে। ঈদের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে তরুণী ও বিভিন্ন বয়সের নারীরা কিনছেন লিপস্টিক, নেইলপলিশ, আইলাইনার, আইশ্যাডো। এর সাথে সব সময়ের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন ফেস পাউডার, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন, ব্লাশার, বডি স্প্রে, পারফিউম, প্যানস্টিক, শ্যাম্পু, সাবান কিনতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
কসমেটিকসের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি কোনো বাছ-বিচার নেই। যার যেমন পছন্দ ও সামর্থ্য তিনি তেমন ধরনের প্রসাধন পণ্য কিনছেন।
রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের শাইলা কসমেটিকস কর্নারের শাইলা জেসমিন বলেন, শেষ দিনে উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যার পর এই ভিড় আরও বাড়বে। তাই বিক্রি জমে উঠেছে। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর বেচাকেনা একটু খারাপ। ঈদের দিন নিজেকে সাজাতে তরুণীরা ফাউন্ডেশন, ফেস পাউডার, আইলাইনার, মাসকারা, আইশ্যাডো, লিপস্টিক, নেইলপলিশ এসব পণ্য বেশি কিনছেন।
আর ঈদের দিন ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মধ্যে ক্রেতারা বেশি কিনছেন শ্যাম্পু, লোশন, ক্রিম। চলছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু, সাবান, হারবাল ক্রিম। দাম ১০০ থেকে সাড়ে ১ হাজার টাকার মধ্যে। ফেস পাউডার ও ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চলছে বেশি মিডিয়াম বেইস কালার। এছাড়াও অনেকে তাদের গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন বিভিন্ন রঙের ফাউন্ডেশন। দাম ৩৫০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যেই আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তসহ প্রায় সব শ্রেণির ক্রেতাদেরই পছন্দের মার্কেট আরডির বিভিন্ন কসমেটিকস দোকান বলেও জানান।
এদিকে মেহেদি বিতানের কসমেটিকস দোকানের বিক্রেতা মাহফুজ বলেন, এবার ঈদে জ্যাকলিনের ফেস পাউডার ও এনটিক্সের গয়না চলছে বেশি। সাধ্যের মধ্যে এর দাম হওয়ায় আর মোটামুটি মানসম্মত বলে এর চাহিদা বেশি।
এছাড়া মেকাপের পণ্যগুলোর চাহিদা সব ধরনের ক্রেতার কাছে বেশি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এসব দোকানে যেসব ফেস পাউডার পাওয়া যাচ্ছে এগুলোর দাম ২৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ এবং ফাউন্ডেশন ৫৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। প্যানস্টিক ১৫০-৮৫০ টাকা, আইলাইনার ও মাসকারা ২০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত লিপস্টিক ১২০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও আই-ব্রো পেন্সিল ও কাজলের দাম ৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। ঈদের দিন মেকআপ করার পাশাপাশি নিজেদের হাত মেহেদির রঙে সাজাতেও ভোলেন না ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা। দোকানিরা তাদের কথা মাথায় রেখে কসমেটিকসের পাশাপাশি মেহেদিও বিক্রি করছেন। মেহেদির মধ্যে আলমাস মেহেদি, লিজান, রাঙাপরী শাহ্জাদি, রাঙা, মমতাজ টিউব মেহেদিগুলোই বেশি চলছে বলে জানান এই বিক্রেতা। এগুলোর প্রতিটির দাম ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যই।
এই মার্কেটে প্রসাধনসামগ্রী কিনতে আসা তরুণী প্রিয়া, ঝরনা ও মনিকা জানান, পুরো রমজানজুড়েই কেনাকাটা হয়েছে তাদের। ঈদের পোশাকের সাথে মিল রেখে কেনা হয়েছে জুতোও। সাধারণত প্রসাধনসামগ্রী কেনার জন্য তারা রোজার শেষ দিন অর্থাৎ চাঁদরাতের দিনটি আগে থেকেই নির্ধারণ করে থাকেন। তাই শেষ মুহূর্তে সাজসজ্জার জন্য কসমেটিক পণ্য কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরের চেয়ে প্রতিটি পণ্যের দামই প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন এই তিন ক্রেতা।
এদিকে ফ্যাশনপ্রিয় তরুণরাও পিছিয়ে নেই। ঈদ উপলক্ষে তারাও কিনছেন বিভিন্ন ধরনের পারফিউম, বডি স্প্রে শাওয়ার জেল ইত্যাদি। ছেলেদের পারফিউমের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে এডিডাস, হ্যাবক, পয়জন, কেঞ্জু, ডেভিড বেকহ্যাম, ইটারনিটি, ফারেনহাইট, হুগো বস, সিকে এবং প্লেবয়। পারফিউমের দাম পড়ছে ৮৫০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৪
এসএস/এএটি