ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৪
প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

ঢাকা: আসন্ন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটে স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট কর এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।  

দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাকুক না কেন- এক্ষেত্রে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

অর্থাৎ এবার বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এতে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।  

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখা আবশ্যক। অর্থনীতিতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি এবং তা বজায় রাখার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য আমাদের অধিক পরিমাণ রাজস্ব জোগান দিতে হবে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ডেটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) চালু হওয়ার ফলে বিভিন্ন কোম্পানির অপ্রদর্শিত আয় ও পরিসম্পদ প্রদর্শনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া, রিটার্ন দাখিলে করদাতার অজ্ঞতাসহ অনিবার্য কিছু কারণে অর্জিত সম্পদ প্রদর্শনে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। এ অবস্থায় করদাতাদের আয়কর রিটার্নে এ ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে।  

অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থ-প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রী আয়কর আইনে কর প্রণোদনা সংক্রান্ত একটি অনুচ্ছেদ সংযোজনেরও প্রস্তাব করেছেন।

প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট কর এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।

‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যে এ বাজেট বিদায়ী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অংকে ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বেশি। বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের আকার সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে দুই লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরে ছিল পাঁচ লাখ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৪
জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।