ঢাকা: দেশের আবাসন শিল্প রক্ষায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জমি ও ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
রোববার (৯ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত বাজেট সর্ম্পকিত রিহ্যাবের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা সরকারের প্রতি এসব দাবি জানান।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- রিয়েল এস্টেট সেক্টরের বর্তমান অবস্থা ও বিশ্বের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় আবাসন ব্যবসায়ীদের আয়কর হ্রাস করা; সেকেন্ডারি মার্কেটের প্রচলন করা; মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট ক্রয়ে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃৃক ডিজিট সুদে ক্রেতা সাধারণকে হোম লোন প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের স্বার্থে আমরা আবাসন খাতকে গতিশীল করার আহ্বান জানাই। মানুষ নিরাপদে বসবাসের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই চায়। সবার জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় বাজেট পাশ করার আগে আমাদের দাবিগুলো বিবেচনার আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবিগুলো বাজেটে সম্পৃক্ত করা হলে এ খাত সরকারের রাজস্ব আয়ে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এবং ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ঝুঁকিমুক্ত হবে। কারণ নতুন সম্পদ সৃষ্টি প্রবৃদ্ধিকে সরাসরি ধনাত্বক করে। অন্যথায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত সব ব্যবসায়ী মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হবে। এতে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, নিবন্ধন ব্যয়, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের জন্য হাউজিং লোন সম্পর্কে তেমন কোনো আলোচনা নেই। দেশের বৃহত্তর অর্থনীতির স্বার্থে জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা আবাসন খাতকে গতিশীল করার জন্য সরকারের যে ধরনের নীতি সহায়তা দরকার ছিল তা বাজেটে দৃশ্যমান নয়।
সংবাদ সম্মেলনে কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আবসান খাতে কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) বিনিয়োগের সুযোগ নৈতিকভাবে সঠিক না হলেও এটি সসময়োপযোগী। প্রস্তাবিত বাজেটের এ সিদ্ধান্তের ফলে আবাসনে বিনিয়োগ আসবে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে। এ টাকা আসলে মূল ধারার অর্থনীতিতে যুক্ত হচ্ছে। এ টাকার অস্তিত্ব আছে। সুতরাং সে টাকাটা পড়ে থেকে কোনো লাভ নেই। এটা বিনিয়োগ করলে সরকারেরই লাভ।
তিনি আরও বলেন, এ টাকা যদি মূলধারায় নিয়ে না আসেন, তাহলে তো টাকা পাচার হয়ে যাবে। তাতে কার ক্ষতি? বরং মন্দের ভালো এটা যে, দেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নৈতিকতার প্রশ্নে আমি বলব, যে জিনিসটা হয়ত সঠিক না। একজনকে ১৫ শতাংশ এবং আরেকজনকে ৩০ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এটা হয়তো উচিত না। কিন্তু, যদি একজনকে টেক্সনেটের আওতায় নিয়ে আসা হয়, টিনের আওতায় নিয়ে আসা হয়, ভবিষ্যতে তো তাকে ট্যাক্স দিতে হবে।
বাজেট ব্যবসাবান্ধব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সার্বিকভাবে দেখলে আংশিক ব্যবসাবান্ধব। আমাদের অন্য দাবিগুলো যদি যুক্ত করা হয়, তাহলে আমি বলব পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সহ-সভাপতি এম. এ. আউয়াল, মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাস, আব্দুর রাজ্জাক, দেলোয়ার হোসেন, প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যান্ডিং কমিটির পরিচালক মুহাম্মদ লাবিব বিল্লাহ্।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
এসসি/জেএইচ