ঢাকা: সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। সব ধরনের সবজির বাজার স্থিতিশীল থাকলেও অস্থির হয়ে উঠেছে কাঁচামরিচের বাজার।
শুক্রবার (২১ জুন) রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন সরবরাহ কম থাকায় কাঁচামরিচের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকারভেদে ২৮০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও এটি ২৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা। দামের কারণে অনেক দোকানিই কাঁচামরিচ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
এ ব্যাপারে তালতলা ডেসকো অফিসের সামনের সড়কের সবজি বিক্রেতা মো. শাহজাহান বলেন, গত সপ্তাহেও কাঁচামরিচ বিক্রি করেছি। আজ আর মরিচ আনিনি। বেশিরভাগ ক্রেতা ১০ থেকে ২০ টাকার মরিচ ক্রয় করে। এতে করে পরিমাণ করে দিলে তর্কাতর্কি হয়। এজন্য দাম কমা না পর্যন্ত কাঁচামরিচ বিক্রি করবো না বলে তিনি জানান।
এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমে ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ১০ টাকা কমে ৩০০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজ ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে এসব বাজারে সব ধরনের সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, সাজনা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে শশার ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রুকলি ৪০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৯০ টাকা আর আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১০০-১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা , মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাস ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৪০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, আড়ই মাছ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮৫ টাকা।
বাজারগুলোতে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশি ও আমদানি করা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা। এসব বাজারে ঈদকে সামনে রেখে আদা ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা এবং রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৪
এসএমএকে/আরআইএস