ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শুরু হলো পাঁচ দিনের হস্তশিল্প মেলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
শুরু হলো পাঁচ দিনের হস্তশিল্প মেলা

ঢাকা: নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিকভাবে নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে পাঁচ দিনের হস্তশিল্প মেলা-২০২৪ শুরু হয়েছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এ মেলার উদ্বোধন করেন।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) এ মেলার উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন এবং এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

মেলাটি সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে (সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ৮টা পর্যন্ত)। মেলায় দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ মেলায় পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, বেত ও বাঁশজাত পণ্য, তাঁত পণ্য, কারুপণ্য, হ্যান্ডমেইড জুয়েলারি, মৃৎশিল্পজাত পণ্য প্রভৃতি প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া অংশগ্রহণকারী একাধিক প্রতিষ্ঠান (ক্ল্যাসিক্যাল হ্যান্ডমেইড প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেড,  নাদিয়া জামদানি ওয়েভিং ফ্যাক্টরি, আধুনিকা, টুইংকেল ক্রাফট, কল্পতরু, মা এন্টারপ্রাইজ, প্রকৃতি প্রভৃতি) মেলায় হস্তশিল্পজাত পণ্য প্রস্তুত প্রক্রিয়া উপস্থাপন করে দর্শনার্থীদের প্রত্যক্ষ করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের ৭৭ হাজার ৩১৭ বর্গফুট আয়তনের হলে প্রায় ১০০টি হস্তশিল্পজাত পণ্য উৎপাদক, সরবরাহকারী ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্বল্প মূল্যে সেলস্কিম স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় যেসব প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি), জয়িতা ফাউন্ডেশন, বাংলাক্রাফট (গোল্ডেন গ্রিট, ক্ল্যাসিক্যাল হ্যান্ডমেইড প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেড, সুআঁশ, জুট ফিউসন বিডি, আর্টিফ্যাক্ট, লিজা বুটিকস, প্রকৃতি, হীড হ্যান্ডিক্রাফটস, জারিনস ক্রিয়েশন, বুনিসুতা, সাজোয়া টেক্সটাইল, আধুনিকা, আজুরা ফ্যাশন, পানসি জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল, কারুপণ্য রংপুর লিমিটেড, বেঙ্গল ব্রেইডেড রাগস লিমিটেড, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ফন গোল্ডেন হারভেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, গ্রীন গোল্ডেন জুটেস্ক, হুর, এশিয়া প্যাসিফিক জোন, ক্লে ইমেজ, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি, মা এন্টারপ্রাইজ, ওয়েন্ড (উইমেন এন্টারপ্রেনার্স নেটওর্য়াকিং ফর ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন্স), জেডএ ট্রেডিং, মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, অনন্যা সক্স অ্যান্ড ইনার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আসমা বুটিকস, বাবু লেদার, বাংলা লেদার, জে এন ট্রেডিং, জেড এন লেদার কমপ্লেক্স, কুমুদিনী হ্যান্ডিক্রাফট, কল্পতরু, বিডি ক্রিয়েশন, ডিজাইন বাই রুবিনা (সাসটেইনেবল বাংলাদেশ- প্রেজেন্টেড বাই জুট ল্যান্ড বাংলাদেশ, দ্য জুট ফাইবারস বিডি, জুটমার্ট ইন্টারন্যাশনাল) প্রভৃতি অন্যতম।

মেলায় সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড হতে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিআরটিসির ডেডিকেটেড শাটল বাস নিয়মিত মেলার দর্শনার্থীদের আনা-নেওয়ায় নিয়োজিত থাকছে। মেলায় দ্বিতল কার পার্কিং-এ পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধা ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে বিস্তর পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।

দর্শনার্থীদের সব প্রকার তথ্যপ্রদানের জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি তথ্য কেন্দ্র।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পরিচ্ছন্নকর্মী। এছাড়া, মেলার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিকরণার্থে মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি সার্ভেল্যান্স সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি গার্ড নিয়োজিত আছে। যেকোন ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনারোধে মোতায়েন করা হয়েছে ফায়ার ব্রিগেড। মেলায় সুলভ মূল্যে চমৎকার পরিবেশে দর্শনার্থীদের খাবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে চারটি ফুড স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ক্ষুদ্র পরিসরে হস্তশিল্প রপ্তানি শুরু হয়। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৯ হাজার ডলার। ধীরে ধীরে হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বাড়ে। গত ৫ বছরে বিশ্ব বাজারে গড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের অধিক হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানি হয় যেখানে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানি হয় বাংলাদেশ থেকে। একক দেশ হিসেবে চীন বৈশ্বিক হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানি বাজারের ৫০ শতাংশের অধিক জায়গা দখল করে আছে (ভিয়েতনাম-১১.৩ শতাংশ, নেদারল্যান্ডস-৩.৩ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া-৩.২ শতাংশ, স্পেন-২.৬ শতাংশ, ফ্রান্স-২.২ শতাংশ, ভারত-২.২ শতাংশ, জার্মানী-২.২ শতাংশ, পোল্যান্ড-২.২ শতাংশ, কানাডা-১.৫ শতাংশ, বাংলাদেশ-১.৪ শতাংশ ইত্যাদি) (তথ্যসূত্র: আইটিসি ট্রেড ম্যাপ)। বাংলাদেশের মাটি, হোগলাপাতা, কচুরিপানা, পাট, বাঁশ ও বেতের মতো কাঁচামাল দিয়ে হাতে তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ, ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, জাপান, তাইওয়ানসহ অর্ধশতাধিক দেশে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।