ঢাকা, বুধবার, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঋণ পেতে আবেদন তারল্য সংকটে থাকা সাত ব্যাংকের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
ঋণ পেতে আবেদন তারল্য সংকটে থাকা সাত ব্যাংকের

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিশেষ সুবিধায় অর্থ সহায়তার জন্য আবেদন করেছে সাতটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।

সংকটে থাকা এসব ব্যাংকের কোনো কোনোটি পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত তার‌ল্য সহায়তা চেয়েছে।

দৈনিক চাহিদা মেটাতে নগদ টাকার সংকটে শরীয়াভিত্তিক পরিচালিত বেশ কিছু ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে সংকটে আছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরাসরি টাকা ছাপিয়ে সহায়তার বিকল্প হিসেবে ব্যাংকের ডিমান্ড প্রমিসরি (ডিপি) নোটের বিপরীতে অন্য ব্যাংক থেকে ধারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ঘোষণার পর এসব ব্যাংক ঋণ পেতে আবেদন করেছে।

ঋণ সহায়তার বিষয়ে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে আর কোনো ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেবে না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকের মাধ্যমে অর্থাৎ এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা আমানত হিসেবে পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা (গ্যারান্টি) দেবে। এই প্রক্রিয়াটি প্রস্তুত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এখন আমাদের আমানতকারীদের একটা চাপ রয়েছে, বিল পরিশোধ করতে পারছি না, এছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠানের অর্থও দেওয়া যাচ্ছে না- এমন পরিস্থিতিতে কিছু অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রয়োজন আরও অনেক বেশি। যে অর্থ চাওয়া হয়েছে তা দিয়ে শুধু আমানতকারী ও পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধ হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে ধার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর দায়িত্বে আসেন নতুন গভর্নর। টাকা ছাপিয়ে ব্যাংককে ধার দিলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আশঙ্কায় টাকা ছাপিয়ে টাকা ধার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে ব্যাংক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে বেশ কিছু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় নগদ টাকার সংকট আরও তীব্র হয়।

সংকটে থাকা এসব ব্যাংককে বিকল্প সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকর দ্বারস্থ হতে হয়।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, আপৎকালীন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে বিশেষ ধার দিতে একটি নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। নীতিমালার আলোকে সংকটে থাকা ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে তিন মাস, ছয় মাস কিংবা এক বছরের জন্য বিশেষ নগদ অর্থের সহায়তা পাবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আবেদন করবে। এতে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা— অর্থাৎ আমানত, ঋণ, খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করে দেবে।

সূত্র জানায়, গ্যারান্টির বিপরীতে টাকা নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে। এছাড়া আয় অব্যাহত রাখতে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া যাবে। তবে কোনো অবস্থায় এ ব্যাংকগুলো বড় ঋণ দিতে পারবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
জেডএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।