ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি সপ্তাহে বাড়বে নীতি সুদহার: গভর্নর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি সপ্তাহে বাড়বে নীতি সুদহার: গভর্নর

ঢাকা: উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি সপ্তাহে নীতি সুদহার (পলিসি রেট) বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

এছাড়া তিনি বলেন, সংকটে থাকা দেশের নয় ব্যাংক পরিদর্শন শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।  

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ব্যাংক খাতের সংস্কারে গভর্নরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে কেন্দ্রেীয় ব্যাংক। টাস্কফোর্সের দুটি সভা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৪ জন কর্মকর্তাকে ব্যাংকগুলো পরিদর্শনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি কয়েকজন পরিদর্শক নিয়োগ দিয়ে টাস্কফোর্স কার্যক্রম শুরু করবে।  

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, প্রথম ধাপে ইসলামী ব্যাংকসহ তিনটি ব্যাংকের সম্পদ নিরূপণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আরও তিনটি করে নয় ব্যাংকে এ কার্যক্রম চালানো হবে।  

তিনি বলেন, টাস্কফোর্স মূলত তিনটি বিষয়ে কাজ করবে। প্রথমত, ব্যাংকগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত সম্পদ নির্ণয় করবে। এরপর ব্যাংকগুলোর সম্পদ কোথায় আছে, তা চিহ্নিত করা হবে। এরপর ওই সম্পদ পুনরুদ্ধারে কাজ করবে। এক্ষেত্রে প্রথম ধাপে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিয়োগ দেওয়া ১৪ জন কর্মকর্তাকে তিন ভাগে বিভক্ত করে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুই গ্রুপে চারজন করে কর্মকর্তা থাকবেন। আর অন্য গ্রুপে রয়েছেন ছয়জন। এক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বড় ব্যাংক হওয়ায় পরির্দশনের দায়িত্বে থাকবেন ছয় কর্মকর্তা। পাশাপাশি নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি নিরীক্ষকদের যুক্ত করা হবে। উন্নয়ন সহযোগীরা এসব অর্থ দেবে। ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এখানো কোনো সিদ্ধান্তে যায়নি বলে জানান গভর্নর। বলেন, আমরা চেষ্টা করব, ছোট ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে ফেলা যায় কিনা। এটা করতে পারলে ভালোই হবে। এসব ব্যাংককে যেহেতু মূলধন সহায়তা আমরাই করবো, সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ অনেকগুলো ব্যাংকের আগের মালিকরা অনিয়ম করে তাদের মালিকানা হারিয়েছেন। এখন ওই মালিকানা সরকারের ক্ষেত্রে একীভূত করা সহজ হবে। তবে বাস্তবতা বুঝে আমরা কাজ করবো। তবে কয়েকটি ব্যাংক কমিয়ে ফেলা অবশ্যই ভালো হবে।  

তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি সপ্তাহে আবারও নীতি সুদহার (পলিসি রেট) বাড়ানো হবে। এরপর আগামী মাসে আরও একবার বাড়ানো হবে। বর্তমানে নীতি সুদহার ৯ শতাংশে রয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়। এক ব্যাংকের তারল্য কমছে, আরেক ব্যাংকের বাড়ছে।
 
কিছু ব্যাংক থেকে গ্রাহক টাকা তুলে অন্য ব্যাংকে রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব ব্যাংক থেকে টাকা তোলা হচ্ছে তারা তারল্য সংকটে পড়ছে। আবার যাদের কাছে রাখা হচ্ছে, তাদের তারল্য বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য আমরা গ্যারান্টর হয়ে তারল্য বেশি থাকা ব্যাংকগুলো থেকে কম থাকা ব্যাংকগুলোকে টাকা দেব। এক্ষেত্রে দুর্বল ব্যাংক টাকা না দিতে পারলে ওই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক পরিশোধ করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
জেডএ/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।