ঢাকা: দেশের বাজারে অনেকদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিটি কিনতে গিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ দেখানো নতুন কিছু নয়।
বিক্রেতাদের শঙ্কা, আগামী কয়েকদিনে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও শুক্রাবাদ বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেল।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে ডায়মন্ড নামে পরিচিত বিক্রমপুরের আলু ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কেজিতে পড়ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা।
অথচ গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা।
এদিকে বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, আলুর দাম আগামী কয়েকদিনে আরও বাড়তে পারে। এর প্রমাণ পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে এখনই পাওয়া যাচ্ছে। কিছু দোকানে এখন থেকেই ৭৫-৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিদের দাবি, পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। ৬৮-৬৯ টাকায় প্রতি কেজি আলু পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ ও নষ্ট আলু বাদ দেওয়ার পর প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৭২-৭৩ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খামারবাড়ি এলাকার এক বিক্রেতা বলেন, শুনেছি আলুর দাম আরও বাড়বে। গত চারদিনেই কেজিতে ১০ টাকা দাম বাড়ছে। নতুন আলু ওঠার আগে এ দাম আর কমবে না। আলুর দাম ১০০ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে একই এলাকায় সাব্বির আহমেদ নামের আরেক বিক্রেতাকেই আবার ৭০ টাকায় আলু বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমি এক সপ্তাহ আগে ৬২ টাকা দরে আলু কিনে এনেছি। বিক্রি করছি ৭০ টাকায়। এখন দাম বেড়েছে শুনেছি। কিন্তু এখনো কিনিনি। যদি বেশি দামে কিনতে হয়, তাহলে বেশি দামে বিক্রি করব।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো বিল্লাল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও আলুর পাল্লা বিক্রি করেছি ২৮০ টাকায়। এখন বিক্রি করছি ৩৫০ টাকায়। দাম আর বাড়বে কি না, জানি না। যদি সরবরাহ কম থাকে, তাহলে দাম বাড়বে। আর সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। তবে এখন আলুর মৌসুম শেষের দিকে, যার কারণে দাম না কমার শঙ্কাই বেশি।
নতুন আলু বাজারে উঠতে এখনো দেড়-দুই মাস সময় লাগবে বলেও জানান এ বিক্রেতা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিটির দাম প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেই যাচ্ছেন ক্রেতারা। জোবায়ের আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, আলুর দাম মাঝে কমেছিল কিছুটা। দাম আরও কমবে, এই আশায় তখন কিনিনি। কিন্তু এখন দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বাসায় এজন্য স্ত্রীর কাছে ঝাড়িও খেতে হয়েছে।
বাহার হোসেন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, সকালে ভ্যানে করে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখলাম। ভ্যানে যদি দাম ৮০ টাকা হয়, তাহলে দোকানে কত হবে? আর সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আমরা ভেবেছিলাম, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাজার ব্যবস্থার উন্নতি হবে। কিন্তু দাম আরও বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
এসসি/আরএইচ