ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বাধীনতার পর প্রথম ‘অর্থনৈতিক শহীদ’ পাট: উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
স্বাধীনতার পর প্রথম ‘অর্থনৈতিক শহীদ’ পাট: উপদেষ্টা

ঢাকা: স্বাধীনতা পরবর্তী পাট আমাদের প্রথম অর্থনৈতিক শহীদ বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, পাটকে অনিয়ন্ত্রিত মজুতদারি রাখা যাবে না।

ব্যবসা করতে যতটুকু মজুত করার প্রয়োজন ততটুকুই করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে বহুমুখী পাটপণ্যের মেলা ও প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ বশির উদ্দিন বলেন, পাটকে আবেগ দিয়ে বাঁচানো যাবে না। পাটের আবেগ দিয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী আবেগ দিয়ে সেই পাটকে বাঁচানো যায়নি। স্বাধীনতা পরবর্তী পাট আমাদের প্রথম অর্থনৈতিক শহীদ।  

তিনি বলেন, পাটকে বাঁচাতে হলে এর ব্যবহারিক মূল্য ও ব্যবহারিক উপযোগিতার সৃষ্টি করতে হবে। শৈল্পিক মূল্য দিয়ে পাটকে বাঁচানো যাবে না। পাটকে বাঁচাতে হলে ব্যবহারিক স্কেল-আপ করতে হবে। বলা হচ্ছে, তৈরি পোশাক শিল্পকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা-নীতির সহায়তা দেওয়া হয়, ব্যাংকঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু শুরুতে এমনটা ছিল না। শুরুতে তৈরি পোশাক শিল্পকেও ব্যাংক ঋণ দিত না।  

উদ্যোক্তারা নিজেদের উদ্যোগে তৈরি পোশাক শিল্পকে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসার পর ব্যাংক অর্থায়ন শুরু করে উল্লেখ করেন বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা।  

তিনি বলেন, আপনারা উদ্যোগ নিন, সরকার সাথে আছে। পাটের সেই জায়গা তৈরি করুন, তারপর ব্যাংক অর্থায়ন করতে এগিয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টা হওয়া মানে আমি ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিত্ব করছি না, দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছি। তবে এটা আশা করবেন না যে, রাষ্ট্র সব কিছু করে দেবে। আপনি শুরু করুন, রাষ্ট্র আপনার সাথে আছে। পাটকে বাঁচাতে হলে অনিয়ন্ত্রিত মজুদদারি বন্ধ করতে হবে। আমরা সেটা করছি যাতে কৃষক টাকা পায়।

পাট শিল্পের উদ্যোক্তাদের দুস্থ শিল্পের উল্লেখ করে বশির উদ্দিন বলেন, এ সংস্থার সাথে ১০৮ জন উদ্যোক্তা আছে। অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, বড়জোর ১০ জন উদ্যোক্তা আত্মমর্যাদা নিয়ে ব্যবসা করছেন। বাকিদের তা নেই।  

পাট শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেন উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বস্ত্র ও পাট সচিব  আ. রউফ বলেন, বর্তমানে পাট থেকে এক বিলিয়ন রপ্তানি আয় আসে। পাট রপ্তানিতে পরিমাণ না বাড়িয়ে শুধু প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন করেই রপ্তানি আয় তিন বিলিয়ন করা সম্ভব।

জেডিপিসির নির্বাহীর পরিচালক জিনাত আরা বলেন, এবারের মেলায় এক হাজার চারজন অংশ নিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের পণ্য যাতে আরও টেকসই হয়, সেজন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার উদ্যোক্তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবেন।  

বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, পাটের জন্য দেশ স্বাধীন করলাম আর সেই পাটকে ভুলে গেছি আমরা।  

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে তুলা আমদানি করলে দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়। পাট নিজেদের পণ্য অথচ পাট নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।  

পাট নিয়ে গবেষণা ও পাটের উন্নয়ন না হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের সম্প্রসারণ হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন পাট খাতের উদ্যোক্তা রাশেদুল করিম মুন্না।  

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যেমন সুবিধা পায়, ক্যামিক্যাল আমদানিতে পাট শিল্পকেও একই বন্ড সুবিধা দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
জেএ/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।